ডিএ মামলা, সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের হলফনামার পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত কনফেডারেশন, কী যুক্তি নিয়ে লড়ছে কর্মীরা

রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) মামলায় সুপ্রিম কোর্টে নতুন মোড়। সম্প্রতি রাজ্য সরকার আদালতে যে হলফনামা জমা দিয়েছে, তার বিভিন্ন দিক খণ্ডন করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলেন রাজ্য সরকারি কর্মীদের সংগঠন ‘কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ’-এর নেতা মলয় মুখোপাধ্যায়। কনফেডারেশন খুব দ্রুত তাদের পাল্টা পিটিশন সুপ্রিম কোর্টে জমা দিতে চলেছে।

ডিএ মামলা নিয়ে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের কলকাতা হাইকোর্টে জয় হলেও, সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। এর আগে সুপ্রিম কোর্ট ২৫% বকেয়া ডিএ দিতে নির্দেশ দিলেও, রাজ্য আর্থিক সংকটের যুক্তি দেখিয়ে তা দিতে পারেনি। এবার হলফনামায় রাজ্য সরকারের দেওয়া যুক্তির পাল্টা জবাব দিতে তৈরি হচ্ছে কর্মী সংগঠন।

রাজ্যের যুক্তির বিরুদ্ধে কনফেডারেশনের পাল্টা
হলফনামায় রাজ্য সরকারের প্রধান প্রশ্ন ছিল— ২০০৮ সাল থেকে ডিএ দেওয়া সত্ত্বেও ২০১৬ সালে কর্মীরা কেন মামলা করলেন? এর জবাবে কনফেডারেশন নেতা মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন:

বঞ্চনা ‘আকাশছোঁয়া’: মলয় মুখোপাধ্যায় যুক্তি দেন, পূর্বতন বাম আমলে ডিএ নিয়ে বঞ্চনা থাকলেও তা ‘সহনীয় পর্যায়ে’ ছিল। কিন্তু বর্তমান সরকারের বঞ্চনার পর্যায় ‘আকাশছোঁয়া’, যা কর্মীদের মামলা করতে বাধ্য করেছে।

‘অবাান্তর’ তুলনা: রাজ্য সরকার দাবি করেছে, দেশের ১২টি রাজ্য কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেয় না। কনফেডারেশনের মতে, এই তুলনা ষষ্ঠ বেতন কমিশনের ভিত্তিতে করা হয়েছে, যা একেবারেই অবান্তর। মলয় মুখোপাধ্যায়ের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের মামলাটি চলছে পঞ্চম বেতন কমিশনের ভিত্তিতে। সেই সময় অসম, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ডের মতো রাজ্যগুলি কেন্দ্রের নিয়মেই ডিএ দিত।

আগামীতে কী পদক্ষেপ?
কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ জানিয়েছে, তারা খুব দ্রুত তাদের পিটিশন সুপ্রিম কোর্টে জমা দেবে। ইতিমধ্যেই তাদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও ফিরদৌস শামিমের সঙ্গে আলোচনা করে তথ্য পরিসংখ্যান আদালতে পেশ করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

মলয় মুখোপাধ্যায় কর্মীদের উদ্বিগ্ন না হতে আহ্বান জানিয়েছেন এবং এই মামলায় ন্যায় বিচার পাওয়ার বিষয়ে তারা ‘আশাবাদী’ বলে জানান। সমস্ত আইনি প্রস্তুতি সম্পন্ন করে দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন জানানো হবে বলে খবর।