গুলশন কলোনি কাণ্ড, মিনি ফিরোজকে জেরা করে পশ্চিমবঙ্গে লুকিয়ে রাখা অস্ত্রের ভাণ্ডার খুঁজছে লালবাজার

গুলশন কলোনি গুলি-কাণ্ডে দিল্লি থেকে গ্রেফতার হওয়া মূল অভিযুক্ত মিনি ফিরোজকে জেরা করে এবার পশ্চিমবঙ্গে লুকিয়ে রাখা বিপুল বেআইনি অস্ত্রের ভাণ্ডার এবং বিহারের পাচার চক্রের হদিশ পেতে তৎপর কলকাতা পুলিশ। বেআইনি অস্ত্র তৈরির কারখানার মালিকদের সঙ্গে মিনি ফিরোজের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন।

সোমবার কলকাতায় আনার পর মিনি ফিরোজকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হয় এবং আদালত তাঁকে পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে। এই মুহূর্তের জেরার মূল লক্ষ্য হলো:

পশ্চিমবঙ্গের কোথায় কোথায় তিনি অস্ত্র বিক্রি করেছেন এবং সেই অস্ত্র লুকিয়ে রাখা আছে।

বিহারের কোন চক্রের কাছ থেকে তিনি নিয়মিত অস্ত্র কিনে রাজ্যে পাচার করতেন।

কেন অস্ত্র হাতে নিয়েছিলেন মিনি ফিরোজ?
পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদে মিনি ফিরোজ জানিয়েছেন, একসময় গুলশন কলোনির বেআইনি নির্মাণ ব্যবসা তাঁর হাতেই ছিল। কিন্তু পরে তাঁরই সহযোগীরা সেই ব্যবসার দখল নিয়ে নেয়, ফলে তাঁর আয় বন্ধ হয়ে যায়। ব্যবসার দখল ফেরত পাওয়া এবং শক্তি প্রদর্শনের জন্যই তিনি গুলি চালিয়েছিলেন। তবে ঘটনার এতটা প্রচার হবে এবং তাঁকে গ্রেফতার হতে হবে—তা তিনি আঁচ করতে পারেননি। গ্রেফতারির ভয়েই তিনি রাজ্য ছাড়েন এবং কখনও বিহারে, কখনও অন্য জায়গায় একাধিকবার ডেরা বদল করে লুকিয়ে ছিলেন। এমনকী, নিয়মিত ফেসবুকে লাইভ করে তিনি পুলিশের চোখে ধুলো দিতে চেয়েছিলেন।

উৎসবের মুখে লালবাজারের বাড়তি সতর্কতা
উৎসবের মরশুম শুরু হওয়ায় এই পরিস্থিতিতে যাতে রাজ্যে নতুন করে আর কোনও বেআইনি অস্ত্র না-ঢোকে, সেই বিষয়ে বাড়তি তৎপরতা শুরু করেছে লালবাজার। মিনি ফিরোজের সূত্র ধরে এখানে থাকা অস্ত্রের ভাণ্ডারের হদিশ দ্রুত পেতে মরিয়া তদন্তকারীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পদস্থ পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, “বেআইনি অস্ত্র ঢোকা বন্ধ করতে নাকা চেকিং আরও বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি জেলা ও কমিশনারেটস্তরের পুলিশকে একযোগে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” শেষ পর্যন্ত মিনি ফিরোজের মুখ থেকে রাজ্যের অস্ত্রপাচার চক্রের কত বড় তথ্য উঠে আসে, এখন সেদিকেই নজর সকলের।