বারাসত আদালতে রণক্ষেত্র, ASI-কে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত ৩ আইনজীবীর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা

উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত আদালত চত্বরে এক এএসআইকে (ASI) মারধর করে রক্তাক্ত করার ঘটনায় অভিযুক্ত আইনজীবীদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করল পুলিশ। সূত্রের খবর, মঙ্গলবারের এই হামলার ঘটনায় তিনজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত ওই তিন আইনজীবী পলাতক। রাতে অভিযুক্তদের খোঁজে পুলিশের একটি টিম তাঁদের বাড়িতে হানা দিলেও কাউকেই খুঁজে পায়নি।

যেভাবে উত্তপ্ত হলো আদালত চত্বর
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল তিন আইনজীবীর উপর দুষ্কৃতী হামলার অভিযোগকে কেন্দ্র করে। সোমবার বাড়ি ফেরার পথে দত্তপুকুর থানা এলাকায় একটি পেট্রল পাম্পে ওই তিন আইনজীবীর উপর স্থানীয় কয়েকজন দুষ্কৃতী হামলা চালায় বলে অভিযোগ। পুলিশ রাতেই তিন হামলাকারীকে গ্রেফতার করে।

মঙ্গলবার ধৃতদের বারাসত আদালতে পেশ করার সময় আইনজীবীদের একাংশ পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে চলে ধস্তাধস্তি। অভিযোগ, বিক্ষোভ চলাকালীনই তাঁরা হঠাৎ পুলিশের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং বারাসত থানার এএসআই সুপ্রিয় ভদ্রকে মারধর করেন। সংবাদমাধ্যমের ভিডিয়োতে দেখা যায়, ওই পুলিশ আধিকারিকের নাক ফেটে গিয়েছে এবং মাথাতেও আঘাত লেগেছে। রক্তে লাল হয়ে যায় তাঁর সারা শরীর। পরে জেলা বারের সম্পাদকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

‘আইন সকলের জন্য সমান’: কড়া বার্তা পুলিশের
এই ঘটনার তদন্ত করতে বুধবার বারাসত আদালতে যান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) অতীশ বিশ্বাস। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি জেলা বারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হামলার ঘটনায় যেই যুক্ত থাকুক, তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “মঙ্গলবারের ঘটনার প্রেক্ষিতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। মামলা হয়েছে, তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্তরা আইনজীবী পেশার সঙ্গে যুক্ত নাকি অন্য কোনও পেশার সঙ্গে জড়িত, সেটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আইনের চোখে তারা অপরাধী। তাছাড়া আইনজীবী বলে গ্রেফতার করা যাবে না, এটা একদমই ভুল কথা। আইন সকলের জন্য সমান।”

এদিকে, হামলার ঘটনার দায় নিজেদের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বারের সম্পাদক অলোক সমাজপতি, যদিও ভিডিয়োতে দেখা যায় তাঁর সামনেই হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটছে। তবে তিনি এএসআইকে আগলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টাও করেন। অতীশ বিশ্বাস জানান, জেলা বারের সদস্যরাও এই ঘটনার নিন্দা করেছেন এবং তাঁরা পুলিশকে সহযোগিতা করছেন। আইন মেনেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।