নবপত্রিকা কি গণেশের স্ত্রী? কেন কলাবউকে দেবী রূপে পূজা করা হয়? জানলে চমকে যাবেন!

দুর্গাপূজার মূল পর্ব শুরু হয় নবপত্রিকা স্নান ও স্থাপন করার মধ্য দিয়ে। এই প্রাচীন প্রথাটি মূলত শস্য ও প্রকৃতির দেবীকে আহ্বান করার একটি প্রতীকী রূপ। ‘নবপত্রিকা’ শব্দের আক্ষরিক অর্থ হলো ‘নয়টি পাতা’। এটি দুর্গাপূজার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা এই উৎসবের ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক তাৎপর্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

পৌরাণিক মতে, এই নয়টি পাতা প্রকৃতপক্ষে নয়টি ভিন্ন গাছের অংশ, যা দেবী দুর্গার নয়টি ভিন্ন রূপের প্রতীক। অন্য আরেকটি মতে, নবপত্রিকা হলেন সিদ্ধিদাতা গণেশের স্ত্রী। পূজার সময় কলাগাছ এখানে প্রতীকী হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যাকে স্থানীয়ভাবে ‘কলাবউ’ বলা হয়ে থাকে।

নবপত্রিকা তৈরির জন্য বেশ কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়। সাধারণত, নয়টি ভিন্ন গাছের পাতা বা ডাল ব্যবহার করা হয়। এগুলো হলো: কলাগাছ, বেলগাছ, হলুদ গাছ, জয়ন্তী, অশোক, মানকচু, শালিধান, ডালিম এবং কচু।

দুর্গাপূজার সপ্তমী তিথির সকালে নবপত্রিকা সংগ্রহ করা হয়। এরপর একটি সাদা অপরাজিতা লতা দিয়ে এই নয়টি গাছের ডাল বা অংশ একসাথে বেঁধে দেওয়া হয়। সেটিকে একটি লাল পাড়ের সাদা শাড়ি দিয়ে ছোট বধূর মতো করে সাজানো হয়। এরপর শাড়িতে মোড়া নবপত্রিকাটিকে একটি কাঠের বেদীর ওপর স্থাপন করা হয় এবং এর সাথে একটি কলাগাছও বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর ঘট স্থাপন করা হয় এবং সেই ঘটের পাশে নবপত্রিকা রাখা হয়। এই নবপত্রিকাকেই দেবী দুর্গার প্রতীক হিসেবে পূজা করা হয়।

প্রতিমা বিসর্জনের মতোই নবপত্রিকারও বিসর্জন হয়। বিজয়া দশমীর দিন প্রতিমা বিসর্জনের সময় এটিকেও গঙ্গায় বা কোনো পবিত্র জলাশয়ে বিসর্জন দেওয়া হয়।