“এখন পর্যন্ত ২৫৮ জন…”-টিটিপি জঙ্গি প্রতিদিন পাকিস্তানি সেনাকে করছে হত্যা!

পাকিস্তানে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) আবারও সে দেশের সেনাবাহিনী, পুলিশ ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, গত আট মাস ধরে প্রায় প্রতিদিন কোনো না কোনো নিরাপত্তা কর্মী জঙ্গিদের হামলার শিকার হচ্ছেন। সম্প্রতি বান্নু জেলার সেনা ঘাঁটিতে হামলার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে মেজর আদনান আসলামকে তার আহত সঙ্গীকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়। এই ঘটনার পর মেজর আদনানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হলেও, সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে, কারণ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা লাগাতার জঙ্গিদের শিকার হচ্ছেন।

কেন বাড়ছে টিটিপি-র হামলা?
পাকিস্তানি সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে টিটিপি-র হামলায় ২,৫০০-এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে হামলার সংখ্যা ৬৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্টের মধ্যে শুধু খাইবার পাখতুনখোয়াতে (KPK) ৭৬৬টি চরমপন্থী ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে ১৬৬ জন নিরাপত্তা কর্মী, ৯২ জন পুলিশ সদস্য এবং ১৫৯ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন। একই সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ২৯৩ জন জঙ্গিকেও হত্যা করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালিবান সরকারের ফিরে আসা টিটিপি-কে নতুন শক্তি দিয়েছে।

টিটিপি-র সন্ত্রাস কি থামবে না?
জাতিসংঘের ২০২৪ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, আফগানিস্তানে টিটিপি-র ৬,০০০ থেকে ৬,৫০০ জঙ্গি রয়েছে এবং তাদের আফগান তালিবানের সমর্থন রয়েছে। পাকিস্তান বারবার কাবুলকে টিটিপি-কে আশ্রয় দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করছে, যদিও আফগানিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে। বিবিসি উর্দু-র এক খবর অনুযায়ী, ২০১৮ সালে মার্কিন ড্রোন হামলায় মুলভি ফজলুল্লাহ নিহত হওয়ার পর মুফতি নুর ওয়ালি মেহসুদকে টিটিপি-র প্রধান করা হয়। তিনি বিচ্ছিন্ন ছোট ছোট জঙ্গি গোষ্ঠীকে আবার একত্রিত করে সংগঠনকে শক্তিশালী করেছেন। বান্নু, উত্তর ওয়াজিরিস্তান এবং বাজৌর-এর মতো এলাকায় পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং সেনাপ্রধান আসিফ মুনির কাবুলের কাছে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে তাদেরকে পাকিস্তান এবং টিটিপি-র মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে হবে, কিন্তু বর্তমানে টিটিপি-র হামলা থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।