“মেঘ ভাঙা বৃষ্টির বাড়বাড়ন্ত…”-কেন মেঘ ফেটে পড়ছে? হিমালয়ের সাথে এই ধ্বংসযজ্ঞের সম্পর্ক কী?

উত্তরাখণ্ডে দেরাদুনের উপর মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ফলে আবারও হিমালয় অঞ্চলের প্রাকৃতিক সংকটের দিকে মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। এই ঘটনায় অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই বছর বর্ষা মৌসুমে হিমালয় অঞ্চলে, বিশেষ করে উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ এবং জম্মু-কাশ্মীরে, একাধিকবার মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে ভূমিধস, নদীর জলস্ফীতি, এবং ভয়াবহ বন্যা দেখা গেছে, যার কারণে হাইওয়ে ও সড়ক ভেঙে পড়েছে। এই ঘটনাগুলোতে বিপুল সংখ্যক মানুষের জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্ষা মৌসুমে হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা হলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এর তীব্রতা ও সংখ্যা বৃদ্ধি খুবই উদ্বেগজনক। এটি কেবল একটি প্রাকৃতিক ঘটনা নয়, বরং জলবায়ু পরিবর্তন এবং হিমালয়ের ভঙ্গুর ভূ-প্রকৃতির (টপোগ্রাফি) ফল। এবার বর্ষা অস্বাভাবিকভাবে সক্রিয় ছিল। দেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে গত দেড় মাস ধরে লাগাতার বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি উত্তর দিকে সরে এসেছে, যার কারণে হিমালয়ের অঞ্চলে তীব্র বৃষ্টি হয়েছে।

‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি বছরের আগস্ট মাসে এই অঞ্চলে ৩৪ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সামগ্রিক বর্ষা ৩০ শতাংশেরও বেশি ছিল। সেপ্টেম্বরের প্রথম ভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৭ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হিমালয়ের ভূ-প্রকৃতির কারণে আরও ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠেছে। যেখানে সমতল ভূমিতে ২৪ ঘণ্টায় ৩০০ মিলিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টিপাত সহ্য করা যায়, সেখানে হিমালয় অঞ্চলে এই একই পরিমাণ বৃষ্টি ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনে।