যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণরত ইউক্রেনীয় সেনাদের ট্যাংক-বিধ্বংসী অত্যাধুনিক সুইচব্লেড ড্রোন চালানো শিখিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। এক ঊর্ধ্বতন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাতে সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
সুইচব্লেড ড্রোন হলো এমন একটি অস্ত্র, যা ব্যাকপ্যাকে বহন করা যায় এবং বহু মাইল দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নিজেই ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে কাজ করা এ ড্রোনগুলোকে ‘কামিকাজে’ বা আত্মঘাতী ড্রোনও বলা হয়।
সুইচব্লেড ড্রোনের ব্যবহার শেখা ইউক্রেনীয় সেনারা যুক্তরাষ্ট্রে পেশাদার সামরিক শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। মার্কিন এক সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘শিগগিরই’ ইউক্রেনে ফিরে যাওয়ার আগে এ প্রশিক্ষণরত সেনাদের অন্যান্য অস্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণও দেওয়া হতে পারে।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে সুইচব্লেড ড্রোন নতুন সংযোজন। হোয়াইট হাউস গত ১৬ মার্চ জানিয়েছিল, তারা ইউক্রেনকে ১০০টি সুইচব্লেড ড্রোন দেবে।
সুইচব্লেড ড্রোন
উড়তে শুরু করার সময় এদের ডানাগুলো ব্লেডের মতো বেরিয়ে আসে বলে এগুলোকে ‘সুইচব্লেড ড্রোন’ বলা হয়। লক্ষ্যবস্তুতে সরাসরি আঘাত হানতে সক্ষম এ আত্মঘাতী ‘কামিকাজে ড্রোন’। একটি ট্যাংক মুহূর্তের মধ্যে গুঁড়িয়ে দিতে বা শত্রু বাহিনীর একটি দলকে নিমিষের মধ্যে শেষ করতে সক্ষম এ ড্রোন। এক বার ব্যবহারযোগ্য এ ড্রোনগুলো যুক্তরাষ্ট্রের অন্য ড্রোনগুলোর তুলনায় অনেকটা সস্তা। এরোভায়রনমেন্ট সংস্থা এ ‘কামিকাজে ড্রোন’-এর প্রস্তুতকারক। এ ড্রোন মূলত দুটি আকারে পাওয়া যায়—‘সুইচব্লেড ৩০০’ ও ‘সুইচব্লেড ৬০০’।
‘সুইচব্লেড ৩০০’র ওজন প্রায় আড়াই কিলোগ্রাম। অপেক্ষাকৃত হালকা ড্রোনটি টানা ১৫ মিনিট পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে। যেন পিঠের ব্যাগে বহন করা যায়, তা মাথায় রেখে এ ড্রোন তৈরি করা হয়েছে। শত্রুপক্ষের গতিবিধির ওপর নজর রাখতে ছোট পদাতিক সেনাদলকে সাহায্য করে এ ড্রোন।
অন্যদিকে, ‘সুইচব্লেড ৬০০’ ড্রোনটি আকারে ও ওজনে তুলনামূলকভাবে বড়। এ ড্রোনের ওজন প্রায় সাড়ে ২২ কিলোগ্রাম। এ ড্রোনগুলো টানা ৪০ মিনিট পর্যন্ত উড়তে পারে। এটি ‘ভ্রাম্যমাণ ক্ষেপণাস্ত্র’ হিসেবেও পরিচিত। শত্রুপক্ষের কামান ধ্বংস করতে এ মিসাইলের জুড়ি মেলা ভার।
সুইচব্লেড ড্রোন রাডারে শনাক্ত করা কঠিন। ২০১০ সালে আফগানিস্তান যুদ্ধের সময় তালেবানের বিরুদ্ধে মার্কিন সেনারা এ ড্রোনগুলো ব্যবহার করেছিল। মার্কিন সেনামহলে এ ড্রোন ‘ফ্লাইং শটগান’ হিসেবেও পরিচিত।
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও রাশিয়া, চীন, ইসরায়েল, ইরান ও তুরস্কের কাছে সুইচব্লেড ড্রোন রয়েছে।