‘৩২ হাজার চাকরি বাতিলের ওপর প্রভাব পড়তে পারে’, কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পর কেন এমন মন্তব্য আইনজীবীর

কলকাতা হাইকোর্ট পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের (DPSC) বৈধতা বাতিল করে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে। বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের সিঙ্গল বেঞ্চ সোমবার এক বদলি মামলার রায়ে জানিয়ে দেয় যে, ২০১৫ সালের পর থেকে এই সংসদের কোনো আইনি অস্তিত্ব নেই। এর ফলে DPSC-এর নেওয়া সমস্ত পদক্ষেপ, বিশেষ করে শিক্ষকদের বদলির নির্দেশ, এখন থেকে অবৈধ বলে গণ্য হবে।

কী ছিল এই মামলার নেপথ্যে?
পূর্ব মেদিনীপুরের কসবা শীতলা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা নীলাঞ্জনা মাইতি তার বদলির নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা করেন। তার আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য ও ফিরদৌস শামিম আদালতে জানান যে, ২০১৫ সালের পর থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের ডিপিএসসি পুনর্গঠন করা হয়নি। এই সময়সীমার মধ্যে সংসদের কোনো সদস্য না থাকলেও সচিব বদলির নির্দেশ জারি করেছেন, যা ১৯৭৩ সালের প্রাথমিক শিক্ষা আইন অনুযায়ী অবৈধ।

আদালতের পর্যবেক্ষণ
আদালত এই যুক্তিকে সমর্থন করে জানিয়েছে যে, ডিপিএসসিতে মোট ৪৪ জন সদস্য থাকার কথা, যার মধ্যে বিধায়ক, জেলা পরিষদের সদস্য এবং পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা থাকেন। পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষেত্রে এই সংসদ শেষবার ২০১১ সালে গঠিত হয়েছিল এবং ২০১৫ সালে তার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। নিয়ম অনুযায়ী, শূন্য পদে নতুন সদস্য মনোনীত করার জন্য একটি আইনি বিজ্ঞপ্তি (গেজেট) প্রকাশ করা প্রয়োজন, যা করা হয়নি।

আইনজীবীরা আরও দাবি করেছেন যে, শুধু পূর্ব মেদিনীপুর নয়, রাজ্যের আরও অনেক জেলায় একই ধরনের সমস্যা রয়েছে। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এই রায় ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল মামলাতেও প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ এই রায় DPSC-র ক্ষমতা ও অস্তিত্ব নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।