মহাকাশে গেলে দ্রুত বুড়িয়ে যায় মানুষ! চমকপ্রদ তথ্য উঠে এলো নতুন গবেষণায়

মহাকাশে দীর্ঘ সময় থাকলে মানুষের শরীরে কী ধরনের প্রভাব পড়ে, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন। সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, স্যান দিয়েগোর একদল গবেষক এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছেন। তাদের গবেষণা বলছে, মহাকাশের পরিবেশ মানবদেহের স্টেম কোষকে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক দ্রুত বার্ধক্যের দিকে ঠেলে দেয়।

গবেষণা কী বলছে?
এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা মানবদেহের ‘হেমাটোপোয়েটিক স্টেম’ এবং ‘প্রোজেনিটর সেল’ নিয়ে কাজ করেছেন, যা রক্ত এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষকরা ৩২ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত এই কোষগুলোকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা আইএসএস-এ রাখেন। একই ধরনের আরেকটি কোষের সেট পৃথিবীতে রাখা হয় নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে।

মহাকাশে থাকা কোষগুলোতে কিছু ক্ষতিকর পরিবর্তন দেখা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে:

কোষের নিজেদের পুনর্গঠনের ক্ষমতা কমে যাওয়া।

ডিএনএ-র ক্ষতির প্রবণতা বেড়ে যাওয়া।

মাইটোকন্ড্রিয়ায় প্রদাহ সৃষ্টি হওয়া।

গবেষকদের মতে, এই পরিবর্তনগুলো মহাকাশের চাপ, যেমন মাইক্রোগ্র্যাভিটি (অল্প মাধ্যাকর্ষণ) এবং মহাজাগতিক বিকিরণের কারণে ঘটে থাকে।

পৃথিবীতে ফিরলে কী হয়?
আশার কথা হলো, এই পরিবর্তনগুলো স্থায়ী নয়। গবেষকরা জানিয়েছেন, যখন কোষগুলোকে মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয়, তখন সেগুলো আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে শুরু করে।

‘ইউসি স্যান দিয়েগো স্যানফোর্ড স্টেম সেল ইনস্টিটিউট’-এর পরিচালক ক্যাট্রিওনা জেমিসন বলেন, “মহাকাশ মানুষের শরীরের জন্য সবচেয়ে বড় চাপের পরীক্ষা।” তিনি আরও বলেন, এই গবেষণা শুধু নভোচারীদের সুরক্ষা দিতেই সাহায্য করবে না, বরং পৃথিবীতে মানুষের বার্ধক্য এবং ক্যানসারের মতো রোগ বোঝার জন্য নতুন মডেল তৈরি করতেও সহায়তা করবে।

এই গবেষণার ফলাফল মহাকাশ গবেষণার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ভবিষ্যতের দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অভিযানের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।