২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর এবার ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে মাঠে নেমে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সংগঠনকে আরও মজবুত করতে এবং রাজ্যের ক্ষমতা ধরে রাখতে এবার শুরু থেকেই সাংগঠনিক স্তরে জোর দেওয়া হচ্ছে। সেই লক্ষ্যেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একের পর এক সাংগঠনিক জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন। আগামী সোমবার ক্যামাক স্ট্রিটে দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার নেতাদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করবেন তিনি।

কেন এই জরুরি বৈঠক?

দলীয় সূত্রে খবর, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয় পেলেও সংগঠনের কিছু দুর্বলতা প্রকাশ্যে এসেছে। বিভিন্ন জায়গায় অন্তর্কলহ, শৃঙ্খলার অভাব এবং বিজেপির প্রচার কৌশল মোকাবিলায় পিছিয়ে পড়ার মতো বিষয়গুলো সামনে এসেছে। এই সমস্ত সমস্যা দূর করতে এবং প্রতিটি জেলাকে আরও শক্তিশালী করতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যক্তিগতভাবে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

দমদম-ব্যারাকপুর কেন গুরুত্বপূর্ণ?

তৃণমূলের কাছে দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এই অঞ্চল রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত সংবেদনশীল। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন, শিল্পাঞ্চল এবং নতুন ভোটারদের উপস্থিতি এই অঞ্চলের নির্বাচনী সমীকরণকে প্রভাবিত করে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল এই এলাকায় ভালো ফল করলেও, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ভোট বৃদ্ধি দলকে চিন্তায় ফেলেছে। এই পরিস্থিতিতে সংগঠনকে আরও মজবুত করে বিজেপির প্রভাব কমানো এবং বৃহত্তর ভোটারভিত্তি ধরে রাখার কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হবে।

বৈঠকে কারা থাকছেন?

জানা গেছে, অভিষেকের এই বৈঠকে দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সমস্ত তৃণমূল ব্লক সভাপতি, যুব তৃণমূল নেতৃত্ব, মহিলা তৃণমূলের প্রতিনিধিরা, টিএমসিপি এবং শ্রমিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও কয়েকজন জেলা পর্যবেক্ষক এবং স্থানীয় বিধায়কদেরও এই বৈঠকে থাকার কথা রয়েছে।

সূত্রের খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই বৈঠকে নেতাদের কাছে কঠোরভাবে কিছু বার্তা দেবেন, যার মধ্যে প্রধান হলো:

সংগঠন শক্তিশালী করা: বুথস্তর থেকে জেলাস্তর পর্যন্ত সংগঠনকে নতুন করে ঢেলে সাজানো।

অন্তর্কলহ বন্ধ করা: দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব যেকোনো মূল্যে রুখে দেওয়া।

বিজেপিকে মোকাবিলা: সোশ্যাল মিডিয়া ও জনসংযোগের মাধ্যমে বিজেপির প্রচারের জবাব দেওয়া।

নতুন প্রজন্মকে যুক্ত করা: যুব ভোটারদের কাছে পৌঁছে দলের প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়ানো।