“ট্রাম্প-মোদীর ব্যক্তিগত বন্ধুত্বও শেষ”-বড় দাবি করলেন আমেরিকার প্রাক্তন NSA

এক সময়ের বহুল চর্চিত ‘হাউডি মোদী’ থেকে ‘নমস্তে ট্রাম্প’ – দুই নেতার ব্যক্তিগত উষ্ণ সম্পর্ক এখন অতীত। এমনটাই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন আমেরিকার প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম LBC-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যেকার সেই ঘনিষ্ঠতা এখন আর নেই।
বোল্টনের মতে, ভারত ও আমেরিকার মধ্যেকার বাণিজ্যিক উত্তেজনা এবং মার্কিন শুল্কনীতিই এই বন্ধুত্বের ভাঙনের মূল কারণ। ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির ফলে ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানো হয়, যা দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি করে। বোল্টন বলেন, “মোদীর সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুব ভালো ছিল, কিন্তু আমার মনে হয় এখন আর সেটা নেই। এটা সবার জন্য একটা শিক্ষা। ব্যক্তিগত সম্পর্ক সাময়িক সাহায্য করতে পারে, কিন্তু খারাপ পরিস্থিতি থেকে তা রক্ষা করতে পারে না।”
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মোদীর চিন ও রাশিয়া সফর এই ধারণাকে আরও জোরদার করেছে। বেজিংয়ে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর বৈঠককে পর্যবেক্ষকরা দিল্লির কূটনৈতিক অগ্রাধিকারের পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। এই বৈঠকগুলি এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে, যখন আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক শীতল।
বোল্টন মনে করেন, ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি হল নেতাদের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক। তিনি বলেন, “ট্রাম্প আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে নেতাদের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কের প্রিজমে দেখেন। যদি পুতিনের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক থাকে, তিনি মনে করেন রাশিয়ার সঙ্গেও আমেরিকার ভালো সম্পর্ক থাকবে। কিন্তু বাস্তবতা তা নয়।”
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারসহ অন্যান্য বিশ্বনেতাদের সতর্ক করে বোল্টন বলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে শক্তিশালী ব্যক্তিগত সম্পর্ক সাময়িক সুবিধা দিলেও, দীর্ঘমেয়াদে তার অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্তের খারাপ দিক থেকে তা কাউকে রক্ষা করবে না। ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ছিলেন বোল্টন। পরবর্তীতে তিনি ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতির কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।
একসময় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে থাকা মোদী-ট্রাম্পের বন্ধুত্ব এখন ইতিহাস। বোল্টনের এই বিস্ফোরক মন্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।