Google Chrome-বিক্রি করতে হবে না! কিন্তু আদালত দিলো নতুন নির্দেশ

পাঁচ বছর ধরে চলা এক ঐতিহাসিক অ্যান্টিট্রাস্ট মামলায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে গুগল। মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের এক আদালত রায় দিয়েছে যে, গুগলকে তার জনপ্রিয় ক্রোম ব্রাউজার বা অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম বিক্রি করতে হবে না। তবে একইসঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়াতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে নিজেদের ডেটা ভাগ করে নিতে হবে।
কী ছিল এই মামলার মূল বিষয়?
মার্কিন বিচার বিভাগ অভিযোগ করেছিল যে, গুগল তাদের অনলাইন সার্চ এবং বিজ্ঞাপনের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য তৈরি করেছে। বিশেষ করে, আইফোনের মতো জনপ্রিয় ডিভাইসে ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে থাকার জন্য অ্যাপলের সঙ্গে তাদের বড় অঙ্কের চুক্তি ছিল। এই চুক্তি অনুযায়ী, গুগল অ্যাপলকে বছরে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার দিয়ে থাকে। আদালত এই চুক্তি বহাল রাখার পক্ষে রায় দিয়েছে।
রায়ের প্রভাব এবং ভবিষ্যৎ:
এই রায়ের পর অ্যালফাবেট (গুগলের মূল কোম্পানি) এবং অ্যাপলের শেয়ারের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বিনিয়োগকারীরা খুশি কারণ গুগলকে তার মূল পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে না। তবে ডেটা ভাগ করে নেওয়ার নির্দেশ গুগলের বিজ্ঞাপন ব্যবসায় প্রতিদ্বন্দ্বীদের অবস্থান শক্তিশালী করবে।
বিচারক অমিত মেহতা তার রায়ে বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন ওপেনএআই (ChatGPT-এর নির্মাতা) ইতোমধ্যে গুগলের জন্য নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছে। এই রায়ের ফলে, এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো এখন গুগলের শেয়ার করা তথ্য ব্যবহার করে নিজেদের সার্চ ইঞ্জিন বা চ্যাটবট আরও উন্নত করতে পারবে।
গুগলের প্রতিক্রিয়া ও অন্যান্য মামলা:
গুগল জানিয়েছে যে, ডেটা ভাগ করে নেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা আপিল করবে। তাদের মতে, এটি ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা লঙ্ঘন করতে পারে। বিশ্লেষকদের ধারণা, এই মামলা শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে গড়াতে পারে।
উল্লেখ্য, গুগল শুধু এই মামলাতেই নয়, বরং আরও কয়েকটি মামলার মুখে রয়েছে। সম্প্রতি ফোর্টনাইট নির্মাতা এপিক গেমসের মামলায় প্রতিষ্ঠানটিকে তাদের অ্যাপ স্টোরে পরিবর্তন আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিজ্ঞাপন প্রযুক্তি খাতে গুগলের একচেটিয়া আধিপত্য নিয়ে আরেকটি মামলার বিচারও শুরু হতে যাচ্ছে। গুগল ছাড়াও মেটা, অ্যামাজন এবং অ্যাপলের মতো বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্রে অনুরূপ মামলা চলছে, যা ওয়াশিংটনের প্রযুক্তি খাতে একচেটিয়া আধিপত্য ভাঙার চলমান চেষ্টার অংশ।