মধ্যপ্রদেশে মর্মান্তিক ঘটনা, ইন্দোরের সরকারি হাসপাতালে ইঁদুরের কামড়ে দুই নবজাতকের মৃত্যু,

মধ্যপ্রদেশের সবচেয়ে বড় সরকারি হাসপাতাল, মহারাজা যশবন্তরাও (MY) হাসপাতালে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে ইঁদুরের কামড়ে প্রাণ হারিয়েছে দুই সদ্যোজাত শিশু। এই ঘটনায় গোটা দেশে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে এবং হাসপাতালের গাফিলতি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

কীভাবে ঘটল এই ঘটনা?
হাসপাতালের সূত্র অনুযায়ী, বুধবার দেবাস থেকে আনা এক নবজাতকের মৃত্যু হয়, যার একদিন আগেই খান্ডওয়ারের এক শিশুকন্যারও একই পরিণতি হয়েছিল। দুই পরিবারই তাদের সন্তানকে সুস্থ করার আশায় হাসপাতালে এসেছিল, কিন্তু তাদের ফিরতে হলো শোক আর যন্ত্রণা নিয়ে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, হাসপাতালের নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (NICU) ভর্তি থাকা অবস্থায় ইঁদুরের কামড়ে এই দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য ইঁদুরের কামড়ে মৃত্যুর কথা মানতে নারাজ। হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট অশোক যাদব জানিয়েছেন, “দুই শিশুরই জন্মগত অ্যানিমিয়া ছিল এবং তাদের ওজনও স্বাভাবিকের থেকে অনেক কম ছিল।” তিনি আরও দাবি করেন, “শরীরে কামড়ের চিহ্ন পাওয়া গেলেও সেগুলো মৃত্যুর কারণ নয়।”

তবে এই দাবির বিপরীতে বড় প্রশ্ন উঠেছে, কেন নবজাতকদের ওয়ার্ডে ইঁদুর অবাধে ঘোরাফেরা করছিল? হাসপাতালের কর্মীরা স্বীকার করেছেন, NICU-এর ভেতরে একটি বড় ইঁদুর অনেক দিন ধরেই দেখা যাচ্ছিল।

সরকারের কড়া পদক্ষেপ
এই ঘটনায় মধ্যপ্রদেশ সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী রাজেন্দ্র শুক্লা জানান, এই ঘটনা অত্যন্ত গুরুতর। সময় মতো পেস্ট কন্ট্রোল না করার জন্য পেস্ট কন্ট্রোল সংস্থাকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং তাদের বরখাস্তের নোটিশ জারি হয়েছে। একই সাথে নার্সিং সুপারিনটেনডেন্টকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, দুই নার্সিং অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং শিশু বিভাগীয় প্রধানকে শোকজ নোটিস পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি জিতু পাটওয়ারি অভিযোগ করেছেন, “ইঁদুর নয়, ব্যর্থ প্রশাসনই শিশুদের মৃত্যুর জন্য দায়ী।”