চীনকে কড়া জবাব, খনিজ পুনর্ব্যবহারে ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ মোদি সরকারের

দেশের গুরুত্বপূর্ণ এবং বিরল খনিজগুলির পুনর্ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে ১৫০০ কোটি টাকার একটি বিশাল প্রকল্প অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এই পদক্ষেপকে ভারতের সবুজ শক্তি রূপান্তর এবং বিদেশি, বিশেষত চীনের ওপর আমদানি নির্ভরতা কমানোর একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই প্রকল্পটি ‘জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ খনিজ মিশনের’ অংশ, যা আগামী ছয় বছর ধরে কার্যকর থাকবে। এর মূল লক্ষ্য হলো বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি), নবায়নযোগ্য শক্তি এবং প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় লিথিয়াম, কোবাল্ট, নিকেল, তামা ও অন্যান্য বিরল খনিজগুলির পুনর্ব্যবহার ক্ষমতা বাড়ানো।
আত্মনির্ভর ভারতের পথে নতুন দিশা
এই মিশনের মোট বাজেট ধরা হয়েছে ৩৪,৩০০ কোটি টাকা, যার মধ্যে সরকার ১৬,৩০০ কোটি টাকা এবং পাবলিক সেক্টর এন্টারপ্রাইজগুলি (পিএসইউ) ১৮,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই প্রকল্পে পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে ৪০০ কিলোটন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বর্তমানে ভারত তার গুরুত্বপূর্ণ খনিজের জন্য আমদানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত লিথিয়াম, গ্রাফাইট, কোবাল্ট এবং নিকেল আমদানিতে ৩৪,০০০ কোটি টাকা খরচ করেছে, যার মধ্যে ৫৬.৩% আমদানি হয়েছে চীন থেকে। খনিজ আমদানিতে চীনের এই আধিপত্য ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। এই নতুন প্রকল্প সেই ঝুঁকি মোকাবিলায় সাহায্য করবে।
বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণ ও কর্মসংস্থান
সরকারের এই উদ্যোগ বেসরকারি খাতের সংস্থাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পুনর্ব্যবহারে উৎসাহিত করবে। হায়দ্রাবাদের মিডওয়েস্ট অ্যাডভান্সড ম্যাটেরিয়ালস (MAM) এবং অন্যান্য সংস্থা যেমন অ্যাটেরো রিসাইক্লিং, লোহুম ক্লিনটেক এবং গ্রাভিটা ইন্ডিয়া লিমিটেড ইতিমধ্যেই এই ক্ষেত্রে কাজ করছে। খনিজ মন্ত্রণালয়ের সচিব ভি.এল. কান্থা রাও জানিয়েছেন, এই প্রকল্পটি বিরল আর্থ উপাদানগুলির পুনর্ব্যবহারে উৎসাহ দেবে এবং এর মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থানও তৈরি হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের পুনর্ব্যবহারের সুবিধা তৈরির মাধ্যমে আগামী দুই দশকে প্রায় ১৫০০ কিলোটন গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। এটি ভারতের শক্তি নিরাপত্তা এবং ২০৭০ সালের মধ্যে ‘নেট-জিরো নির্গমন’ লক্ষ্য পূরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।