দেশপ্রেমের নতুন বার্তা, বাইক র‍্যালির মাধ্যমে ভারত-চীন সীমান্তে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

ভারত ও চীনের সীমান্তে ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের লক্ষ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং বেসামরিক বাইকারদের সহযোগিতায় একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ‘সূর্য স্পিতি বাইক র‍্যালি’ নামের এই অভিযানটি মঙ্গলবার শিমলার জুটোগ ক্যান্টনমেন্ট থেকে শুরু হয়েছে। ১২ থেকে ১৫ই আগস্ট পর্যন্ত চলা এই র‍্যালিতে মোট ৭৮ জন অংশগ্রহণকারী রয়েছেন, যার মধ্যে আটজন মহিলা বাইকারও রয়েছেন।

অভিযানের লক্ষ্য:

এই র‍্যালির মূল উদ্দেশ্য হলো সামরিক-বেসামরিক সম্পর্ক আরও মজবুত করা, সীমান্ত পর্যটনকে উৎসাহিত করা এবং দেশজুড়ে ঐক্য ও দেশপ্রেমের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া। ৮৭১ মেড. রেজিমেন্ট এবং ৭ মহার-এর কমান্ডিং অফিসাররা যৌথভাবে এই র‍্যালির উদ্বোধন করেন। ১৫ই আগস্ট ত্রিপিচস ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার অনুরাগ পাণ্ডের নেতৃত্বে লেপচায় ভারত-চীন সীমান্তে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এই অভিযান শেষ হবে।

অংশগ্রহণকারীরা হিমালয়ের প্রায় ৮০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবেন। এই যাত্রাপথে তারা স্থানীয় মানুষের সাথে মিশবেন, প্রাক্তন সৈনিকদের সাথে দেখা করবেন, এবং বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ভারতীয় সামরিক ঐতিহ্য তুলে ধরবেন।

বাইকারদের ভাবনা:

এই র‍্যালির একজন অংশগ্রহণকারী রজত চোপড়া সংবাদ সংস্থা ANI-কে জানান, স্বাধীনতা দিবসে ভারত-তিব্বত-চীন সীমান্তে পতাকা উত্তোলন করতে পারাটা তার জন্য গর্বের বিষয়। তিনি বলেন, “এই বাইক র‍্যালির মূল লক্ষ্য সীমান্ত পর্যটনকে উৎসাহিত করা। বিদেশ ভ্রমণের পরিবর্তে আমাদের নিজ দেশ ভ্রমণ করা উচিত এবং নিজেদের ঐতিহ্য সম্পর্কে জানা উচিত।” তিনি আরও বলেন, বাইকিং হলো এমন এক নেশা যা মাদক বা অন্যান্য খারাপ অভ্যাস থেকে দূরে রাখে।

আরেক বাইকার তরণ আহুজা বলেন, “ভারতীয় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বাইক চালানো সবসময়ই নিরাপদ। এটি কেবল একটি অ্যাডভেঞ্চার নয়, আমরা এর মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ না করার বার্তাও ছড়িয়ে দিচ্ছি।” তিনি বিশ্বাস করেন, এই ধরনের রাইড আত্ম-আবিষ্কারের একটি মাধ্যম এবং এটি মানুষকে মাদক থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।

মহিলা বাইকার মৌসুমী কাপাডিয়া বলেন, “বয়স বা লিঙ্গ কোনো বাধা নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনার আবেগ। যদি আপনি কিছু করতে ভালোবাসেন, তবে তা মন দিয়ে করুন।” তিনি বলেন, ১৫ই আগস্ট ভারত-তিব্বত-চীন সীমান্তে পতাকা উত্তোলন করাটা তার কাছে রোমাঞ্চকর এক অভিজ্ঞতা হবে।

এই র‍্যালি শুধু একটি অ্যাডভেঞ্চার নয়, এটি দেশের প্রতি ভালোবাসা এবং পরিবেশ সুরক্ষার এক বার্তা। বাইকারদের এই উদ্যোগ সমাজের বিভিন্ন স্তরে দেশপ্রেমের নতুন এক উন্মাদনা তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।