বিশেষ: বিশ্ব বিখ্যাত জেমস বন্ড চরিত্রটি যেভাবে সৃষ্টি করা হয়, জেনেনিন সেই ইতিহাস সৃষ্টিকারী কাহিনী

১৯৫০এর দশকে ইংরেজ লেখক ইয়ান ফ্লেমিং তার বিশ্ববিখ্যাত স্পাই থ্রিলার সিরিজের নায়ক জেমস বন্ড-কে সৃষ্টি করেছিলেন। ফ্লেমিং ছিলেন একজন সাংবাদিক এবং শেয়ারবাজারের দালাল- তবে তার আগে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ নৌবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেছিলেন।

ইয়ান ফ্লেমিংএর জন্ম লন্ডনে ১৯০৮ সালে এক ধনী পরিবারে। তার বাবা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মারা গিয়েছিলেন। ফ্লেমিং বড় হয়ে উঠেছিলেন ব্রিটিশ সমাজের উঁচুতলার প্রাচুর্যের মধ্যেই। তিনি কিছু কাল কাটিয়েছিলেন অস্ট্রিয়া এবং সুইজারল্যান্ডে- সেখানে পর্বতারোহণ এবং স্কি করা ছিল তার নেশা। পরে তিনি চেয়েছিলেন ব্রিটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কাজ করতে, কিন্তু সেখানে সুযোগ মেলেনি। কিছুকালের জন্য তিনি কাজ করেন রয়টার বার্তা সংস্থায় সংবাদদাতা হিসেবে। সোভিয়েত রাশিয়ায়ও ছিলেন তিনি। পরে লন্ডনে শেয়ারবাজারে দালালির কাজ করতে শুরু করেন তিনি।

তার সেই অভিজ্ঞতা দিয়ে কীভাবে তিনি জেমস বন্ডকে সৃষ্টি করেছিলেন চলুন জানা যাক। জেমস বন্ড নামে যে স্পাই চরিত্রটি সৃষ্টি করেছিলেন ইয়ান ফ্লেমিং – তা শুধু যে থ্রিলার সিরিজ হিসেবেই সফল হয়েছিল তাই নয়, তাকে নিয়ে পরবর্তীকালে তৈরি হওয়া সিনেমাগুলো শত শত কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। ইয়ান ফ্লেমিং বলেছিলেন, ‘আমি জেমস বন্ডের চরিত্র সৃষ্টি করেছিলাম ঠিকই, তবে তার সাথে আমার খুব বেশি মিল নেই। বন্ডের মতই আমি স্ক্র্যাম্বলড এগ খেতে ভালোবাসি না, হাফহাতা শার্ট পছন্দ করি না। জেমস বন্ডের মতো খিদে বা সাহস আমার নেই।’ তবে তিনি যাই বলুন, অনেক বিশেষজ্ঞ সমালোচকরা বলেন, ইয়ান ফ্লেমিং এর বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য অবশ্যই জেমস বন্ডের মধ্যেও খুঁজে পাওয়া যায়।

যুদ্ধের সময় ফ্লেমিং এর জীবন কিন্তু মোটেও জেমস বন্ডের মত ছিল না। তিনি তখন নৌবাহিনীর সদর দফতরের কর্মচারী, তবে মাঝে মাঝে তার মাথায় কিছু ভালো আইডিয়া আসতো না তা নয়। তবে যুদ্ধের সময় আমেরিকা ও কানাডা সফরে গিয়ে সিক্রেট সার্ভিসগুলো কিভাবে কাজ করে – তা ভেতর থেকে দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছিল তার। এই কাজের সময় স্পাইদের ট্রেনিংএর জন্য একটা কোর্স হচ্ছিল – ফ্লেমিং ভাবলেন, একবার চেষ্টা করে দেখলে মন্দ হয়না। সুযোগ পেয়ে সেই কোর্সে ঢুকে পড়লেন তিনি। দেখা গেল, ওই কোর্সে ফ্লেমিংই হয়ে উঠলেন সবচেয়ে ভালো শিক্ষানবিশদের একজন। সাগরে ডুবে থাকা জাহাজ থেকে লিম্পেট মাইন অপসারণের কাজও করেছিলেন তিনি।

দীর্ঘদেহী এবং সুদর্শন ইয়ান ফ্লেমিং নারীদের কাছে খুব জনপ্রিয় ছিলেন। তবে ব্রিটেনের উচ্চশ্রেণীর জীবনে হাঁপিয়ে উঠছিলেন ফ্লেমিং। কিন্তু তার জীবন বদলে দেয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ । একত্রিশ বছর বছর বয়সে ফ্লেমিং যোগ দিলেন ব্রিটিশ নৌবাহিনীর ইনটেলিজেন্স বিভাগের প্রধানের ব্যক্তিগত সহকারী পদে। সেখানে তার একজন সহকর্মী ছিলেন এডমিরাল ডেনিং।

এডমিরাল ডেনিং বলেন, ‘আমাদের যেসব প্রাত্যহিক রুটিন কাজ ছিল – সেগুলোতে ফ্লেমিং একেবারেই ভালো ছিলেন না। তবে তার কাছ থেকে আপনার হয়তো কিছু আইডিয়া মিলে যেতে পারতো, অথবা তিনি আপনাকে কিছু লোকের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারতেন। মনে হতো যেন তার দুইটি জীবন আছে। একটা হচ্ছে তার দিনের বেলার জীবন – যখন তিনি এখানে কাজ করতেন। আরেকটা ছিল তার রাতের জীবন – সেখানে তিনি তার সামাজিক মেলামেশার জগতে ঘুরে বেড়াতেন, তাতে ছিল তাসের আড্ডা আর আনুষঙ্গিক অন্য ব্যাপারগুলো।’

তার বান্ধবীদের একজন ছিলেন ক্লেয়ার ব্ল্যানচেট। তখন নৌবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করতেন তিনি। ক্লেয়ার ব্ল্যানচেটের সঙ্গে ইয়ান ফ্লেমিংএর দেখা হয়েছিল শ্রীলঙ্কায় । তিনি বলছেন, তার চোখে কেমন মানুষ ছিলেন ইয়ান ফ্লেমিং। ‘তিনি খুব একটা মার্জিত ব্যক্তি ছিলেন না। সহজ-সরল জিনিসগুলোই ছিল তার পছন্দ করতেন। তিনি ছিলেন মাঠে খেলতে আসা একটি শিশুর মতো, যে চারপাশে তাকিয়ে শুধু খেলার সাথী খুঁজছে।’

সরাসরি যুদ্ধ না করলেও পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়েছিল ফ্লেমিংকে, করতে হয়েছিল ব্রিটেনের শত্রুদের মোকাবিলার নানা কৌশলী পরিকল্পনা। গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য একটি বিশেষ কমান্ডো দলও গড়ে তুলেছিলেন তিনি। ‘এটা আমার কাছে খুবই উপভোগ্য জীবন বলে মনে হতো। এটা ছিল বেশ বিপদজনক কাজ’- বলছেন ইয়ান ফ্লেমিং।

তাছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তিনি উত্তেজনাপূর্ণ কিছু দু:সাহসিক কাজে অংশ নিয়েছিলেন। এই আগ্রহ থেকেই তার যুদ্ধ শেষ হবার পর একটা বই লেখার চিন্তা তার মাথায় এসেছিল। একবার, তখন যুদ্ধ চলছে – একসঙ্গে দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় আমি তাকে কথা প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আচ্ছা ইয়ান, যুদ্ধের পর তুমি কি করবে? কিছু ভেবেছো? সে বলেছিল ‘আমি ভেবেছি, একটা থ্রিলার লিখবো’।

উইলিয়াম প্লুমার বলছেন, ‘তার পর অবশ্য ব্যাপারটা আমি ভুলেই গিয়েছিলাম। যুদ্ধ শেষ হবার পর একদিন আমরা একসাথে লাঞ্চ করতে গেলাম। সেসময় ইয়ান বললো, উইলিয়াম – আমি তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে চাই। ধরো তুমি একটি মেয়েকে পেলে, যার ভেতর সিগারেটের ধোঁয়া ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। তুমি কি করে সেটা বের করবে?”

‘এটা ছিল থুবই অদ্ভূত একটা প্রশ্ন। আমি প্রশ্ন করলাম, আসলে তুমি কি করছো আমাকে বলো তো ? সে বললো, ওয়েল, তুমি নিশ্চয়ই এক্সহেইল শব্দটা ব্যবহার করতে পারো না। তুমি তাহলে কীভাবে ব্যাপারটা বর্ণনা করবে?। তখন আমি বললাম, ওহ আমি বুঝতে পারছি তোমার সমস্যাটা কী – তুমি নিশ্চয়ই একটা বই লিখছো।’ ফ্লেমিং মন দিয়ে লিখতে শুরু করলেন ১৯৫২ সালে। তখন তিনি একটি একটি সংবাদপত্রের জন্য কাজ করছেন। শীতের সময় লম্বা ছুটির সময় লিখতেন তিনি । সেসময় তিনি থাকতেন জ্যামাইকায় – যেখানে তার একটি বাড়ি ছিল। বাড়িটির নাম দিয়েছিলেন তিনি ‘গোল্ডেন আই।’ প্রথম যে বইটি তিনি লিখলেন তার নাম ‘ক্যাসিনো রয়াল।’ সেই বইয়ের প্রধান চরিত্র ব্রিটিশ স্পাই জেমস বণ্ড।

সেসময় একজন বিখ্যাত আমেরিকান পাখি বিশেষজ্ঞ ছিলেন যার নাম ছিল জেমস বন্ড। তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের পাখিদের ওপর একটি বই লিখেছিলেন – আর সেই বইটি ইয়ান ফ্লেমিংএর প্রিয় ছিল। সেই পাখি বিশেষজ্ঞের নামটিই তার স্পাইয়ের জন্য নিয়েছিলেন ফ্লেমিং।

ফ্লেমিং বলছেন, ‘আমি কখনো জেমস বন্ডকে নায়ক হিসেবে দেখাতে চাইনি। আমি চেয়েছিলাম সে হবে একটা ভোঁতা অস্ত্রের মত । তাকে পাঠাবে একটা সরকারি বিভাগ এবং নানা রকম বিচিত্র অকল্পনীয় সব পরিস্থিতির মধ্যে পড়বে সে, আর গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে তার মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসবে।

এই চরিত্রটা কি অনেক দিন ধরে তার মনের ভেতরে গড়ে উঠেছিল? প্রশ্ন করা হয়েছিল ইয়ান ফ্লেমিংকে। ফ্লেমিং বলেন, ‘না, আমি সেটা বলতে পারবো না। আমি আসলে তখন বিয়ে করতে যাচ্ছি, তার ঠিক আগে আগে জীবনের এক নতুন পর্বে প্রবেশ করার যে উৎকণ্ঠা – তা থেকে মনটাকে সরিয়ে নেবার জন্যই আমি ঠিক করলাম যে একটা বই লিখবো।’

নিশ্চয়ই তার নৌবাহিনীতে গুপ্তচর সংস্থায় কাজ করার অভিজ্ঞতা তাতে কাজে লেগেছিল? প্রশ্ন করা হয়েছিল ফ্লেমিংকে।‘হ্যাঁ, সেখানে কাজ করেই আমি জেনেছি – কিভাবে একটা গুপ্তচর সংস্থা কাজ করে। কিন্তু আমার বইয়ে আমি সেটা ওভাবে বলতে পেরেছি কিনা বলতে পারবো না কারণ এটা কল্পকাহিনী এবং বাস্তব জীবনের চাইতে অনেক আলাদা।’

বন্ড চরিত্রটি কি কোনবিশেষ ব্যক্তির আদলে তৈরি হয়েছে নাকি অনেকের চরিত্র মিলিয়ে তৈরি – এ প্রশ্নের জবাবে ফ্লেমিং বলেন, না তা নয়।

‘যেসব কমান্ডার এবং সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টদের আমি যুদ্ধের সময় দেখেছি – তাদের একটি কাল্পনিক মিশ্রণ এই বণ্ড। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক। এতে আমার নিজের চরিত্রের ছায়া পড়েছে কিনা – তা যদি জিজ্ঞেস করেন তাহলে বলবো, না আমি আশা করি পড়েনি।’

কিন্তু নাট্যকার নোয়েল কাওয়ার্ড – যিনি ছিলেন ইয়ান ফ্লেমিংএর একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু্ – তিনি বলছেন ঠিক উল্টো কথা। ‘আমার মনে হয় জেমস বন্ড ইয়ানেরই ফ্যান্টাসি, – সে হয়তো যা হবার স্বপ্ন দেখতো তারই প্রতিমূর্তি। বন্ডের মধ্যে যে নির্দয়, ড্যাশিং ব্যাপারটা আছে তা ইয়ানেরও ছিল। বলতে পারেন, অনেকটা একটা স্কুলেপড়ুয়া ছেলের মত।’

তার প্রথম বই শীতলযুদ্ধের পটভূমিতে লেখা। এখানে সোভিয়েত স্পাই, তাস খেলা, নির্যাতন, প্রেম ও প্রতারণা – সবই আছে। উইলিয়াম প্লুমার বলছেন, তার মনে হয়েছিল বইটার সম্ভাবনা আছে। তাই তিনি পান্ডুলিপিটা প্রকাশক জোনাথন কেপের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে ফ্লেমিং এর সাবেক দুই প্রেমিকা লিজেল পপার এবং কেট ব্ল্যানচার্ড বইটা পড়ে তত উৎসাহিত হননি।

লিজেল পপার বলছিলেন, ‘সে আমার কাছে এসে বললো, তুমি কি এটা একবার পড়ে দেখবে? আমি পড়লাম। পড়ে বললাম, এটা একেবারেই আবর্জনা, ঈশ্বরের দোহাই – এটা তুমি ছাপাতে দিওনা।’
কেট ব্ল্যানচার্ড বলেন, ‘নারী চরিত্রগুলো তো অসহ্য। একেবারেই কার্ডবোর্ডের চরিত্র। তাদের কাজকর্মও অস্বাভাবিক।’ কিন্তু ক্যাসিনো রয়াল ঠিকই প্রকাশিত হলো, ১৯৫৩ সালে, যুক্তরাজ্যে। সমালোচকদের প্রশংসাও পেলো। বইটা দারুণ বিক্রিও হলো। এরপর আরো কয়েকটি বন্ড সিরিজের আরো কয়েকটি পর্ব বেরুলো।

কিন্তু এসব বইতে যে পরিমাণ যৌনতা এবং সহিংসতা ছিল – তাতে ১৯৫০ দশকের ব্রিটেনের অনেকেই ভ্রু কুঁচকোলেন। পল জনসন নামে এক সমালোচক এক কড়া নিবন্ধ লিখলেন পত্রিকায়। পল জনসন পরে বলেন, ‘আমি তার প্রথম যে বইটা পড়েছিলাম তা হলো ডক্টর নো। আমার মনে হলো এটা একটা দানবিক লেখা। এতে ছিল অমার্জিত ধর্ষকামিতা, জঘন্য যৌনতা, নিম্নস্তরের নাক-উঁচু ভাব। আমার বইটা পড়ে জঘন্য লেগেছিল। সে সময় আলজেরিয়ান যুদ্ধ চলছিল। তখন প্রতিদিন খবর বেরুতো কিভাবে ফরাসিদের হাতে আলজেরিয়ানরা নির্যাতিত হয়ে মারা যাচ্ছে। আমি খুবই ক্রুদ্ধ একটা সমালোচনা লিখলাম, তাতে বললাম – এ ধরণের বই যদি লোকে কেনে এবং প্রশংসা করে, তাহলে সভ্য দেশের সরকারগুলো যে অন্য দেশে গিয়ে এরকম কাজ করছে তাতে বিস্মিত হবার কিছুই নেই।’

সাংবাদিকরা ফ্লেমিংকে প্রশ্ন করেছিলেন, আপনার বইয়ে যেসব নির্যাতনের বর্ণনা আছে তা খুবই পাশবিক। ফ্লেমিং জবাব দেন: ‘আপনি কতগুলো পড়েছেন আমি জানি না, কিন্তু বাস্তব জীবনে যা হচ্ছে তার তুলনায় এগুলো কিছুই নয়। গত বিশ্বযুদ্ধের পর আমাদের বোধবুদ্ধি অনেক বেড়েছে। তবে এটা ঠিকই যে সমালোচকদের পক্ষে বইয়ের অনেক কিছুই হজম করা কঠিন হবে।’

জেমস বন্ডের কাছে মনে হয় সেক্স জিনিসটা এক গ্লাস পানি খাবার মতই সহজ?-প্রশ্নের জবাবে ফ্লেমিংএর জবাব: ‘সেটা বলতে পারেন – তবে বন্ডের প্রতিটি বইতে একটি করে নতুন নারী থাকে, তার মানে বছরে একটি। সে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন জায়গায় যায়। সে যে সব জায়গাতেই সুন্দরী নারীদের পেয়ে যায় সেটা আমি খুব খারাপ কিছু মনে করি না। বরং সে জন্য আমি তাকে হিংসে করি।’

ফ্লেমিং প্রতি বছর একটি করে বন্ড সিরিজের বই লিখেছিলেন ১৯৬৪ সালে ৫৬ বছর বয়েসে মারা যাবার আগে পর্যন্ত। এর মধ্যে তিনি আরো কয়েকটি বই লিখেছেন, লিখেছেন শিশুদের জন্য্ও। তার মৃত্যুর কিছু দিন আগে বন্ড সিরিজ নিয়ে সিনেমা বানানো শুরু হয়। বন্ড ছবিগুলো এক দশক ধরে শত শত কোটি ডলারের ব্যবসা করে। তবে ফ্লেমিং এর কিছু বন্ধু মনে করেন, এই বিরাট সাফল্যর জন্য তাকে কিছু মূল্যও দিতে হয়ছে।

বান্ধবী লেজলি বলছেন, ‘সে যখন প্রথম বইটি লিখেছিলো, তা যে জনপ্রিয় হয়েছিল এবং এত অর্থ তিনি উপার্জন করেছিলেন – তা তাকে অবাক করেছিল। তখন তিনি লেখাটা উপভোগ করতেন। কিন্তু পরে যেটা হলো যে এত অর্থ আসছিল বলেই তিনি সেটা ছাড়তেও পারছিলেন না। শেষ দিকে তিনি বন্ডকে রীতিমত ঘৃণা করতেন। তিনি জানতেন যে এটা এখন চালিয়ে যেতে হবে। তবে সিনেমাটা তার ভালো লেগেছিল। তার মনে হয়েছিল এটা খুবই মজার। কিন্তু আমার মনে হয় এই বণ্ড তাকে নি:শেষ করে ফেলছিল।’

সাহিত্যিক বন্ধু প্লুমার বলেন, ‘জেমস বন্ডকে তিনি সৃষ্টি করেছিলেন – তা এক বিশাল চরিত্র হয়ে দাঁড়ালো। একটা ফ্রাংকেনস্টাইন বলতে পারেন। লোকে জেমস বন্ডকে নিয়ে কথা বলতে লাগলো কিন্তু ইয়ান ফ্লেমিংকে তারা ভুলে গেল। ফ্লেমিং একবার বলেছিলেন – “আমি মনে করিনা যে বন্ডের জন্য আমি কোন সিরিয়াস লেখা লিখতে পারছি না। আমি শেক্সপিয়ার হতে চাই না। আমার সেরকম কোন উচ্চাভিলাষ নেই।’

সূত্র: বিবিসি