বাচ্চাদের প্রিয় জিনিস মুখে দিয়ে শান্ত হচ্ছে চীনারা, দূর হচ্ছে এসব সমস্যাও! বিস্তারিত জেনেনিন

দ্রুতগতির এই আধুনিক জীবনে মানসিক চাপ, অনিদ্রা এবং দুশ্চিন্তা সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চীনের তরুণ-তরুণীরা একটি অদ্ভুত সমাধান খুঁজে পেয়েছে—প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্যাসিফায়ার। একসময় যা কেবল শিশুদের জন্য ব্যবহৃত হতো, সেই সিলিকনের খেলনা এখন চীনে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ঘুমের সহায়ক, ধূমপান ছাড়ার উপকরণ এবং মানসিক চাপ কমানোর একটি মাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করছে।

চীনের প্রধান ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম যেমন তাওবাও এবং জেডি ডটকম-এ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্যাসিফায়ার বিক্রি হচ্ছে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিছু অনলাইন দোকানে প্রতি মাসে হাজার হাজার প্যাসিফায়ার বিক্রি হচ্ছে। এগুলোর দাম ১০ ইউয়ান (প্রায় ১.৪০ মার্কিন ডলার) থেকে ৫০০ ইউয়ান (৭০ ডলার) পর্যন্ত হয়ে থাকে।

অনেক ব্যবহারকারী এই অভ্যাসকে মানসিক শান্তির এক মাধ্যম হিসেবে বর্ণনা করেছেন। একজন ব্যবহারকারী অনলাইনে লেখেন, “আমি এটি ব্যবহার করে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। এটি আমাকে মানসিক স্বাচ্ছন্দ্য দেয় এবং আমি অস্থির বোধ করি না।” মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, এই প্রবণতা চরম চাপে থাকা ব্যক্তিদের শৈশবের সেই সময়ে ফিরিয়ে নিয়ে যায়, যা তাদের একসময় নিরাপত্তার অনুভূতি দিত।

তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে সতর্ক করেছেন। সিচুয়ানের একজন দন্তচিকিৎসক ড. ট্যাং কাওমিন বলেছেন যে, প্রাপ্তবয়স্কদের চোয়ালের গঠনের জন্য প্যাসিফায়ার তৈরি করা হয় না। এর দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের ফলে চোয়ালের জয়েন্টে সমস্যা, কামড়ের সমস্যা এবং ঘুমের সময় শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা হতে পারে। তিনি আরও বলেন, “মুখে প্যাসিফায়ার নিয়ে ঘুমালে এটি শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এবং সবচেয়ে খারাপ ক্ষেত্রে, শ্বাসরোধও করতে পারে।”

চীনের অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে শুরু হওয়া এই প্রবণতা এখন টিকটক এবং ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে যে, আমেরিকান প্রাপ্তবয়স্করাও মানসিক চাপ মোকাবিলায় প্যাসিফায়ার ব্যবহার করছেন। এই প্রবণতাকে অনেকেই আধুনিক ‘স্ট্রেস সংস্কৃতির’ মোকাবিলায় স্ট্রেস বল বা ফিজেট স্পিনারের মতোই আরেকটি পদ্ধতি হিসেবে দেখছেন।

প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্যাসিফায়ার ব্যবহারের এই প্রবণতা এটাই প্রমাণ করে যে, জীবন যখন অসহনীয় হয়ে ওঠে, তখন মানুষ স্বস্তির জন্য অপ্রচলিত পদ্ধতির দিকে ঝুঁকে পড়ে।