“এখনও পর্যন্ত ২০ জন…”-চাকরিহারা শিক্ষকদের অন্যত্র নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু সরকারের

স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল হওয়ার পর চাকরি হারানো শিক্ষকদের পুরোনো সরকারি চাকরিতে পুনর্বহালের প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার। শিক্ষক হিসেবে যোগদানের আগে তাঁরা যেসব সরকারি বা আধা-সরকারি দপ্তরে কর্মরত ছিলেন, সেখানেই তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে, এমন ২০ জন শিক্ষককে পুনর্বহালের জন্য নবান্ন থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলিতে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে।
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত এমন প্রায় সাড়ে চার হাজার আবেদন জমা পড়েছে। আবেদনকারীরা তাঁদের পুরোনো সরকারি চাকরিতে ফিরে যাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। রাজ্য সরকার এখন সেই আবেদনগুলি খতিয়ে দেখছে। যেসব ২০ জনকে পুনর্বহালের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তাঁরা মূলত স্বরাষ্ট্র, বিদ্যুৎ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের চাকরি ছেড়ে শিক্ষকতার কাজে যোগ দিয়েছিলেন। নবান্ন এখন তাঁদের পুরোনো কর্মস্থলে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে চিঠি পাঠিয়েছে।
এ বছরের ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই চাকরিহারাদের জন্য একটি নির্দেশ জারি করেছিল। নির্দেশ অনুযায়ী, ২০১৬ সালের আগে যারা বিভিন্ন সরকারি বা আধা-সরকারি পদে কর্মরত ছিলেন, তাঁরা চাইলে তিন মাসের মধ্যে পুরোনো চাকরিতে ফিরে যাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন। কিন্তু ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের অনেকেই অভিযোগ করছেন যে, রাজ্য সরকার এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে অনেক দেরি করেছে।
কিছু চাকরিহারা শিক্ষক আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, আগের চাকরিতে পুনর্বহালের নামে তাঁদের বাড়ি থেকে অনেক দূরের কর্মস্থলে পাঠানো হতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের আবেদন করার তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এই পুনর্বহালের জন্য চাকরি হারানো শিক্ষকরা মুখ্যসচিবের দপ্তর, বিকাশ ভবন, স্কুলশিক্ষা কমিশনার, প্রাথমিক ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, এবং জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন জমা দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার মাদ্রাসা এবং এসএসসি দপ্তরেও আবেদন করেছিলেন।
গত জুন মাসে স্কুলশিক্ষা দপ্তর রাজ্যের সমস্ত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক ডিআই-কে নির্দেশ দিয়েছিল, আবেদনকারীদের পুরোনো কর্মস্থল, ২০১৬ সালের এসএলএসটি-তে তাঁরা কোন স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের চাকরি অনুমোদন হয়েছিল কিনা, বেতন পাচ্ছিলেন কিনা এবং বদলি হয়েছিলেন কিনা— এসব বিষয়ে তথ্য জানানোর জন্য। এই তথ্য সংগ্রহের পরই রাজ্য সরকার পুনর্বহালের প্রক্রিয়া শুরু করল। যদিও এই প্রক্রিয়াটি কত দ্রুত সম্পূর্ণ হবে, তা নিয়ে এখনো সংশয় রয়ে গেছে।