খুঁজে পাওয়া গেল জিলিপির ‘বড়দা’কে, আকারে বিশাল, স্বাদেও অতুলনীয়! এর ওজন জানেন?

হালকা কুড়মুড়ে আর রসে টইটুম্বুর জিলিপির সঙ্গে বাঙালির সম্পর্ক বহুদিনের। কিন্তু এই পরিচিত জিলিপিরই এক বিশাল সংস্করণ তৈরি হয় পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার কেঞ্জাকুড়া গ্রামে। এটি ‘জাম্বো জিলিপি’ নামে পরিচিত এবং এর আকার, ইতিহাস ও স্বাদের কারণে এটি একটি অনন্য মিষ্টি হিসেবে সুনাম অর্জন করেছে। ভাদু এবং বিশ্বকর্মা পুজোকে ঘিরে এই গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টিটি আলোচনার কেন্দ্রে থাকে।

এই জিলিপির আকৃতি সাধারণ জিলিপির চেয়ে অনেক বড়। এর ওজন ৫০০ গ্রাম থেকে শুরু করে ৩-৪ কেজি পর্যন্ত হতে পারে, এমনকি কিছু কারিগর ৫ কেজি ওজনের জিলিপিও তৈরি করেন। স্থানীয় কারিগর ফটিক রায় জানান, এই জিলিপি অন্তত ১০ দিন পর্যন্ত ভালো থাকে। প্রতি কেজি জিলিপির দাম ১৫০ টাকা। আকারে বিশাল হলেও এর স্বাদ এবং গুণগত মান খুবই ভালো।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মুক্তা দত্ত বলেন, এই ‘জাম্বো জিলিপি’ তৈরির ঐতিহ্য প্রায় ৭০-৮০ বছরের পুরনো। এটি শুধু বাঁকুড়ার মানুষই নয়, আশেপাশের জেলা থেকেও বহু মানুষকে আকর্ষণ করে। পুজোর সময় আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে এই বিশেষ মিষ্টি পাঠানো হয়। এই জিলিপিটি রাঢ় বাংলার সাংস্কৃতিক ও বিশেষ খাদ্য ঐতিহ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

জনশ্রুতি অনুসারে, পঞ্চকোট রাজবংশের রাজকন্যা ভদ্রাবতীর অকালমৃত্যুর পর তার স্মরণে ভাদু পুজোর সূচনা হয়। বাঁকুড়ার দ্বারকেশ্বর নদীর তীরে অবস্থিত কেঞ্জাকুড়া সেই প্রাচীন লোকপরম্পরার অন্যতম কেন্দ্র। এখানে ভাদু ও বিশ্বকর্মা পুজোর সঙ্গে এই বিশেষ জিলিপিটি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। প্রতি বছর ভাদ্র মাসের ২৭ তারিখ থেকে আশ্বিন মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত এই জিলিপি তৈরি করা হয়। এটি কেবল একটি পুজোর উপকরণ নয়, বরং বাঁকুড়ার গর্ব, ঐতিহ্য এবং জনপ্রিয়তার প্রতীক।

তবে বাংলাদেশেও বড় আকারের জিলিপির চল রয়েছে। ঢাকার ‘শাহী জিলিপি’ তার বিশাল আকার এবং স্বাদের জন্য বিখ্যাত। ময়মনসিংহে চালের গুঁড়ো ও তেঁতুলের টক মিশিয়ে তৈরি করা হয় আরেক ধরনের সরু জিলিপি, যা ‘টক জিলিপি’ নামে পরিচিত।