স্বাধীনতা দিবসের আগে নয়াদিল্লিতে বাড়তি সতর্কতা, একাধিক হুমকির আশঙ্কায় নিরাপত্তা জোরদার

ভারতের ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের আগে নয়াদিল্লিতে সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলার হুমকির কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। একাধিক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দিল্লি পুলিশসহ অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। এপ্রিল মাসে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা এবং মে মাসে অপারেশন সিঁদুরের পর প্রতিশোধমূলক হামলার ঝুঁকি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এই সতর্কতা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
হুমকির ধরণ ও সম্ভাব্য হামলাকারী
গোয়েন্দা রিপোর্টে বিভিন্ন ধরণের হুমকির কথা উল্লেখ করা হয়েছে:
সন্ত্রাসী হামলা: পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন, বৈশ্বিক জিহাদি নেটওয়ার্ক এবং উগ্র ইসলামপন্থী দলগুলি থেকে বড় ধরনের হামলার আশঙ্কা রয়েছে।
একক আক্রমণ: বিচ্ছিন্নভাবে একজন ব্যক্তি দ্বারা হামলার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ: সাম্প্রতিক অপারেশন সিঁদুরের প্রতিক্রিয়ায় প্রতিশোধমূলক হামলার ঝুঁকি বেড়েছে।
বিচ্ছিন্নতাবাদী ও চরমপন্থী গোষ্ঠী: শিখ জঙ্গি গোষ্ঠী, বামপন্থী চরমপন্থী (LWE) এবং উত্তর-পূর্বের কিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠী থেকেও হুমকির আশঙ্কা রয়েছে।
নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলছেন, দিল্লির বিশাল জনসংখ্যা এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলো অনুপ্রবেশকারীদের জন্য লুকিয়ে থাকার জায়গা হিসেবে কাজ করতে পারে। তাই সব জায়গাতেই বাড়তি নজরদারি রাখা হচ্ছে।
নিরাপত্তা জোরদার এবং নির্দেশাবলী
কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিস্তারিত পরামর্শ দিয়েছে। কর্মীদের পরিচয় যাচাই, বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, কোনো অননুমোদিত ব্যক্তি যাতে নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করতে না পারে।
এছাড়াও, নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে:
তথ্য সুরক্ষায় সতর্কতা: সমস্ত কর্মকর্তাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো নিরাপত্তা সম্পর্কিত তথ্য পোস্ট করতে নিষেধ করা হয়েছে, কারণ এর মাধ্যমে শত্রুপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।
প্রতারকদের থেকে সতর্ক থাকা: পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থাগুলি ছদ্মবেশে কর্মকর্তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করতে পারে। তাই সব নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মীদের কোনো সন্দেহজনক প্রশ্নের উত্তর না দিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
স্বাধীনতা দিবসের মতো গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় অনুষ্ঠানে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার এবং নিরাপত্তা বাহিনী সবরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।