বীরভূমের পদ্ম যাচ্ছে বিদেশেও, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় চিন্তায় চাষিরা!

বাঙালির ‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’-এর জন্য পদ্ম ফুলের চাহিদা থাকে তুঙ্গে, আর সেই চাহিদা মেটাতে বীরভূমের আহমেদপুর এখন দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও পদ্ম পাঠাচ্ছে। যদিও এই গর্বের পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন স্থানীয় পদ্মচাষিরা।

জানা গেছে, বীরভূমের আহমেদপুরের প্রত্যন্ত গ্রামগুলো থেকে পদ্ম ফুল কলকাতা হয়ে প্লেনের মাধ্যমে আমেরিকা, থাইল্যান্ড, নেপাল এবং ভুটানের মতো বিভিন্ন দেশে পৌঁছে যাচ্ছে। সরাসরি আহমেদপুর থেকে বিদেশে না গেলেও, স্থানীয় চাষিদের উৎপাদিত ফুল আন্তর্জাতিক বাজারে যাচ্ছে, যা তাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। এছাড়া, দেশের বিভিন্ন বড় শহর যেমন দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু এবং কেরালাতেও বীরভূমের পদ্ম সরবরাহ করা হয়।

তবে, এই সাফল্যের সঙ্গে রয়েছে এক বড় চ্যালেঞ্জ। অতিবৃষ্টির কারণে বহু পদ্মচাষি ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তাদের অভিযোগ, ন্যায্য মজুরি মিলছে না। একজন পদ্মচাষি জানান, “বৃষ্টির কারণে অনেক ফুল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে আমরা ব্যাপক ক্ষতির শিকার হচ্ছি।”

পদ্ম ফুল চাষিরা বিশেষ প্যাকিং পদ্ধতির মাধ্যমে ফুলগুলোকে বিদেশে পাঠান। একটি বাক্সে পাতা এবং বরফ দিয়ে পদ্ম ফুলগুলি এমনভাবে প্যাকিং করা হয় যাতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েও তা সতেজ থাকে। বর্তমানে, বীরভূমের প্রতিটি পদ্ম বেঙ্গালুরুতে ৪ থেকে ৫ টাকায় বিক্রি হলেও, সেখানে পৌঁছানোর পর তা ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিকোচ্ছে। সামনে বেঙ্গালুরুতে লক্ষ্মীপুজো থাকায় পদ্মের চাহিদা সেখানে আরও বেড়েছে।

এই উৎসবের মরশুমে পদ্মের চাহিদা বহু গুণ বেড়ে যায়, বিশেষ করে দুর্গাপূজা, কালীপূজা এবং লক্ষ্মীপূজার সময়। বীরভূমের অনুকূল আবহাওয়ায় প্রচুর পদ্ম চাষ হয়। তবে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চাষিদের এই লড়াই এখন কঠিন হয়ে উঠেছে।