ধনখড়ের পর কে? ভারতে উপ রাষ্ট্রপতি হওয়ার যোগ্যতা কী? কিভাবে হয় নির্বাচন?

দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে পরিবর্তনের প্রস্তুতি শুরু হল। বর্তমান উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় সোমবার হঠাৎই নিজের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন। সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যজনিত কারণে এই পদত্যাগ। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন। এর ফলে ফের একবার দেশের উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।
ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, তারা নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু করেছে। খুব শীঘ্রই নির্বাচনী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে।
নতুন উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দৌড় শুরু
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের নাম চূড়ান্ত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সংসদের দুই কক্ষ—লোকসভা ও রাজ্যসভার নির্বাচিত এবং মনোনীত সদস্যদের নিয়ে গঠিত ইলেক্টোরাল কলেজের তালিকা হালনাগাদ করার কাজ শুরু হয়েছে।
উপ-রাষ্ট্রপতি কে হন ও কীভাবে নির্বাচন হয়?
ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। রাষ্ট্রপতির অনুপস্থিতিতে তাঁর দায়িত্বভার সাময়িকভাবে উপ-রাষ্ট্রপতির ওপর বর্তায়। তবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তুলনায় উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনেকটাই ভিন্ন।
এই নির্বাচনে কেবলমাত্র লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যরাই ভোটাধিকার প্রাপ্ত হন। এমনকি রাজ্যসভার মনোনীত ১২ জন সদস্যও ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারেন। ভোট হয় একক স্থানান্তরযোগ্য ভোট ব্যবস্থা (Single Transferable Vote System)-এর মাধ্যমে, যেখানে ভোটাররা তাঁদের পছন্দক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচন করেন।
উপ-রাষ্ট্রপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার শর্ত
এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রার্থীকে ভারতের নাগরিক হতে হবে, বয়স হতে হবে ন্যূনতম ৩৫ বছর এবং তাঁকে সাংসদ হওয়ার সমস্ত যোগ্যতা পূরণ করতে হবে। এছাড়াও মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় ১৫,০০০ টাকা সিকিউরিটি ডিপোজিট দিতে হয়।
ভোটগণনার প্রক্রিয়া কীভাবে চলে?
এই নির্বাচনে জয়ী হতে একটি নির্দিষ্ট কোটার প্রয়োজন হয়। মোট বৈধ ভোটসংখ্যার অর্ধেকের বেশি ভোট পেলে তবেই কোনো প্রার্থী জয়ী হন। যদি প্রথম পছন্দ অনুযায়ী কেউ প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট না পান, তবে কম ভোট পাওয়া প্রার্থীকে বাদ দিয়ে তাঁর দ্বিতীয় পছন্দ অনুযায়ী ভোট অন্য প্রার্থীর ঝুলিতে স্থানান্তরিত হয়। এই প্রক্রিয়া তখনই শেষ হয়, যখন কোনও প্রার্থী নির্ধারিত কোটার বেশি ভোট পেয়ে যান।
রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ
জগদীপ ধনখড়ের পদত্যাগে দেশের রাজনৈতিক মহলে নানান আলোচনা শুরু হয়েছে। এই শূন্য পদে কে বসবেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক হিসেব-নিকেশ। বিজেপি ও বিরোধী দলগুলোর কৌশল কী হবে, তা নিয়ে কৌতূহল তুঙ্গে।