সামাজিক মাধ্যমে ‘লাইকের নেশা’, গাছের মগডালে তরুণীর ঝুঁকিপূর্ণ রিল, সমালোচনার ঝড়!

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জনের আকাঙ্ক্ষা এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, মানুষ নিজের জীবনকেও বাজি ধরতে দ্বিধা করছে না। রিল, ভিডিও বা ছবি পোস্ট করে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার বাড়ানোর এই প্রতিযোগিতায় প্রায়শই দেখা যাচ্ছে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ সব কর্মকাণ্ড। কখনও চলন্ত ট্রেনের উপরে উঠে, কখনও পাহাড়ের খাদে দাঁড়িয়ে, আবার কখনও ব্যস্ত রাস্তার মাঝে রিল শুট করে প্রাণহানির ঝুঁকি নিচ্ছেন অনেকে। সম্প্রতি এক তরুণীর একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তাঁকে একটি মৃত গাছের মগডালে উঠে রিল শুট করতে দেখা গেছে, যা দেখে নেটিজেনরা হতবাক এবং একই সাথে চিন্তিত।

ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক তরুণী লাল রঙের শাড়ি পরে একটি মরা গাছের মগডালে উঠে বসে আছেন। যেকোনো মুহূর্তে সেই মগডাল ভেঙে পড়ে তার মারাত্মক বিপদ ঘটাতে পারতো, এমনকি মৃত্যুও হতে পারতো। শাড়ি পরে গাছে ওঠার সময়ও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ছিল। এত ঝুঁকি সত্ত্বেও, তরুণী নির্বিকারভাবে সেই মগডাল থেকে রিল শুট করেছেন।

ভিডিওতে তরুণী নিজেকে ‘গাছের রানি’ বলে সম্বোধন করেছেন এবং মজার ছলে গাছেদের প্রতি তার ভালোবাসা প্রকাশ করতে চেয়েছেন। তিনি বলছেন, “আমি গাছের রানি। আর এত তাড়াতাড়ি শেষ হবে না আমার কাহিনি। সেনাপতি, রাজ্যবাসীকে গিয়ে খবর দাও, গাছের শুধুমাত্র একজনই রানি। সে মহারানি। তাই কেউ কখনও গাছের উপর নিজেদের অধিকার দাখিল করতে পারবে না। গাছেদের উপর শুধুমাত্র আমার অধিকার রয়েছে। গাছেদের সুরক্ষার দায়িত্ব পালন করাও আমার কাজ। আজ থেকে শুরু হল আমি প্রতিশোধ নেওয়ার কাহিনি!”

তবে, তরুণীর এই ‘মজার’ ভিডিওটি তার উদ্দেশ্য পূরণ করতে পারেনি। বরং, এটি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রায় সাড়ে ১৪ মিলিয়ন মানুষ ভিডিওটি দেখেছেন এবং এর বেশিরভাগ দর্শকই তরুণীর এই বিপজ্জনক কাজের জন্য তার তীব্র নিন্দা করেছেন।

একজন নেটিজেন মন্তব্য করেছেন, “লাইকের নেশাই সর্বনাশ। নিজেদের জনপ্রিয়তার জন্য পিছুটান ভুলে যান। এমনকী পরিবারের কথাও ভাবেন না। এই মগডাল থেকে নীচে পড়লেই মৃত্যু নিশ্চিত। অথচ তরুণীর প্রাণে কোনও ভয় নেই!” আরেকজন লিখেছেন, “কোথাকার জীব এরা। কোথা থেকে আসে? যা ইচ্ছে তাই বানিয়ে জনপ্রিয় হতে চায়!” অনেকে গাছের অবস্থা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, কারণ গাছটি মৃত এবং পাহাড়ের খাদের ধারে হওয়ায় যেকোনো সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল যে, সামাজিক মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য মানুষ কীভাবে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিতে দ্বিধা করছে না। এই ধরনের বিপজ্জনক প্রবণতা সমাজের জন্য কতটা ক্ষতিকর, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

সামাজিক মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জনের এই প্রবণতা নিয়ে আপনার কী মতামত?