রাজ্য নির্বাচন দফতরকে স্বতন্ত্র করার নির্দেশ EC-র, দেশজুড়ে ‘SIR’ চালু করতেই সিদ্ধান্ত?

রাজ্যে ‘স্ট্যান্ডার্ড ইনভেস্টিগেশন রিপোর্ট’ (SIR) নিয়ে চলমান উত্তেজনার আবহে এক তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ নিল ভারতের নির্বাচন কমিশন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে চিঠি পাঠিয়ে অবিলম্বে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে একটি ‘স্বাধীন’ বা ‘স্বতন্ত্র’ সংস্থা হিসেবে ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই যদি এই নির্দেশ কার্যকর হয়, তবে রাজ্যে SIR-এর কাজে আর কোনো বাধা থাকবে না, এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হবে।
নবান্নে মুখ্যসচিবের কাছে পাঠানো এই চিঠিতে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে, রাজ্য নির্বাচন দফতরকে আর স্বরাষ্ট্র দফতরের অধীন রাখা যাবে না। বর্তমানে রাজ্য নির্বাচন কমিশন রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরের অধীনে পরিচালিত হয়, যা নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রায়শই সমস্যা তৈরি করে বলে অভিযোগ কমিশনের। কমিশনের দাবি, এই অধীনতার কারণে বাজেট বরাদ্দ, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, কর্মী নিয়োগ, এমনকি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণেও তাদের রাজ্য সরকারের উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়, যা স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে ভোট পরিচালনাকে কঠিন করে তোলে।
কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে দেওয়া সুস্পষ্ট নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, অবিলম্বে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (CEO) অফিসকে সম্পূর্ণরূপে ‘স্বতন্ত্র’ ঘোষণা করতে হবে। এর ফলে মুখ্য নির্বাচনী অফিসকে আর রাজ্য সরকারের উপর নির্ভর করতে হবে না। বাজেট, নিয়োগ বা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত – সব ক্ষেত্রেই তাদের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে। কমিশনের মতে, এই স্বায়ত্তশাসন SIR-এর সুষ্ঠু কাজ করার পথ সুগম করবে এবং সামগ্রিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও স্বাধীন করবে।
বিশেষত ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই এই পদক্ষেপ জরুরি বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। SIR নিয়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের মধ্যে দীর্ঘদিনের চাপানউতোরের মধ্যে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এই স্বাধীনতা রাজ্যের নির্বাচনী কাঠামোতে একটি মৌলিক পরিবর্তন আনবে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করবে।