সীমান্তে ক্যামেরুনের তিন ফুটবলার গ্রেফতার, অবৈধভাবে নেপালে প্রবেশের চেষ্টায় চাঞ্চল্য

সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী (এসএসবি)-র এক অভিযানে ক্যামেরুনের তিন পেশাদার ফুটবলারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, পর্যটন ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তাঁরা অবৈধভাবে ভারতে অবস্থান করছিলেন এবং গোপনে জঙ্গলের রাস্তা ধরে ভারত থেকে নেপালে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। এসএসবি-র তৎপরতায় তাঁদের এই পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।

রবিবার রাতে এসএসবি দার্জিলিং জেলার লোহাগড়-মানঝা এলাকা থেকে এই তিন বিদেশিকে আটক করে এবং পরে তাঁদের পানিঘাটা থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। মঙ্গলবার ধৃতদের মিরিক মহকুমা আদালতে তোলা হয়।

এসএসবি ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে লোহাগড় আউটপোস্টের জওয়ানরা এই অভিযান চালান। পানিঘাটা ও লোহাগড়ের জঙ্গল পেরিয়ে মেচি নদীর ওপারেই নেপাল সীমান্ত। ধৃতরা এই পথ ব্যবহার করে নেপালে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। তবে, যে দালাল তাঁদের এই পথে নিয়ে যাচ্ছিল, সে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।

পানিঘাটা থানার ওসি এনামুল হক জানিয়েছেন, ধৃতরা হলেন টিজোল ইভান, সোয়েমোহো ক্লদ ইদ্রিস এবং বোনহা নিয়াম শ্লোভেন। তিনি বলেন, “কীভাবে, কাদের মদতে তাঁরা এই পথ দিয়ে নেপালে যাচ্ছিলেন, সেই সবকিছুই খতিয়ে দেখা হবে। দীর্ঘদিন আগে তিনজনেরই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তাঁরা অবৈধভাবে ভারতে অবস্থান করছিলেন।”

এসএসবি’র আধিকারিক সন্তোষ কুমার এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। তিনি জানান, টিজোল ইভানের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২৪ সালের ২১শে জুলাই, বোনহা নিয়াম শ্লোভেনের ভিসার মেয়াদ গত বছরের ৭ই নভেম্বর শেষ হয়েছে, এবং সোয়েমোহো ক্লদ ইদ্রিসের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২৫ সালের ১৮ই এপ্রিল। সকলেই পর্যটন ভিসা নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন এবং পেশাদার ফুটবলার হিসেবে শিলিগুড়ি সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন ফুটবল ক্লাবের হয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন। তাঁরা অবৈধভাবে ভারতে থেকেই তাঁদের খেলাধুলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, রবিবার এক দালালের সহায়তায় মিরিকের পথ ধরে ওই তিন ফুটবলার লোহাগড়ে পৌঁছান। লোহাগড় চা বাগান থেকে মাত্র ৫০০ মিটার হেঁটে গেলেই তাঁরা নেপালে পৌঁছে যেতেন। কিন্তু গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এসএসবি জওয়ানরা আগে থেকেই ফাঁদ পেতে তাঁদের গ্রেফতার করেন।

উল্লেখ্য, এর আগেও ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নকশালবাড়ির লালজিজোতে মেচি নদী সংলগ্ন এলাকা থেকে সেনেগালের একজন ফুটবলার এবং বিহারের এক দালালকে আটক করেছিল এসএসবি। এই ঘটনাগুলি সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং ভিসা সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘনের বিষয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।