গ্র্যান্ড হোটেলে ‘গ্র্যান্ড’ চুরি, বাথরুম থেকে উধাও দামি শাওয়ার, রুম থেকে সিলিং ফ্যান

কলকাতার বুকে পাঁচতারা গ্র্যান্ড হোটেল থেকে বেসিন, শাওয়ার, কমোড এবং দামি কল চুরি যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সংস্কার কাজের জন্য আপাতত বন্ধ থাকা এসপ্ল্যানেডের এই বিলাসবহুল হোটেলের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে কীভাবে এত জিনিস উধাও হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নিউ মার্কেট থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
সম্প্রতি হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে শিফট ইঞ্জিনিয়ার তুষার নন্দী একটি রিপোর্ট জমা দেন। সেই রিপোর্টে জানানো হয়, হোটেলের চারতলায় অবস্থিত একটি হাউসকিপিং প্যান্ট্রি থেকে ২২৮টি শাওয়ারহেড এবং ৮টি সিলিং ফ্যান গায়েব হয়ে গেছে। এর পরপরই নিউ মার্কেট থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়। এফআইআর অনুযায়ী, মেরামতির কাজের জন্য এই জিনিসগুলি খুলে প্যান্ট্রিতে একটি নোংরা ফেলার বড় ব্যাগে রাখা হয়েছিল। ৪২৩ নম্বর রুমের ঠিক উল্টোদিকে রাখা এই মূল্যবান সামগ্রীগুলিই চুরি গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে পুলিশের এক কর্তা জানান, “প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, মেরামতির কাজ চলাকালীন আবর্জনা ফেলার আড়ালে এই জিনিসগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে।” পুলিশ আরও জানিয়েছে, হোটেলের ওই নির্দিষ্ট এলাকায় পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না, যা চোরদের জন্য সুযোগ তৈরি করেছে। এমনকি, একটি বেসরকারি সংস্থার প্রায় ২০ জন নিরাপত্তারক্ষী গ্র্যান্ড হোটেলের মতো একটি পাঁচতারা হোটেলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকা সত্ত্বেও এমন একটি ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা নিয়ে পুলিশের মধ্যেও প্রশ্ন উঠেছে।
চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই হোটেল কর্তৃপক্ষও নিজস্বভাবে একটি তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনায় ইঞ্জিনিয়ারিং, সিকিউরিটি, পারচেজ বিভাগ এবং নির্মাণ শ্রমিকদের গতিবিধি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হোটেল কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, ভেতরের কেউ এই চুরির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালেই গ্র্যান্ড কর্তৃপক্ষ সংস্কার ও মেরামতির জন্য হোটেলটি ১৮ মাস বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছিল। প্রথম ধাপে ৫০টি রুম ও স্যুইট, সমস্ত রেস্তোরাঁ এবং ব্যাঙ্কোয়েট হল মেরামত করা হয়েছিল। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও এক বছর হোটেল বন্ধ থাকার কথা রয়েছে, যেখানে প্রায় ২০০টি রুম এবং স্যুইট নতুন করে চালু করা হবে। এর আগেও ২০১৮ সালে একবার ১৮ মাসের জন্য হোটেলটি মেরামতির জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল। এই বিশাল সংস্কার কাজের মাঝেই এমন চুরি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।