২৫ বছর সংসারের পর ৪ সন্তান রেখে ভাগ্নের সাথে পালালেন মহিলা, পঞ্চায়েতে স্বামীর বড় সিদ্ধান্ত

উত্তরপ্রদেশের সিদ্ধার্থনগরের ভবানীগঞ্জ থানার এক গ্রামে এক অভূতপূর্ব ঘটনায় অনেকেই বিস্মিত। প্রায় ২৫ বছর ধরে বিবাহিত এবং চার সন্তানের জননী এক মহিলা হঠাৎই তাঁর ২৫ বছর বয়সী ভাগ্নের প্রেমে পড়েন। এই সম্পর্কের কথা পঞ্চায়েত পর্যন্ত পৌঁছলে, স্বামী যে বিরল বড় মনের পরিচয় দিলেন, তা দেখে সমাজের প্রচলিত ধারণাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৫ বছর আগে ওই ব্যক্তির সঙ্গে পাশের গ্রামের এক মহিলার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। বড় মেয়ের বয়স এখন ২০ বছর, দ্বিতীয় মেয়ের ১৮, বড় ছেলের ১৭ এবং ছোট ছেলের বয়স মাত্র ১০ বছর। স্বাভাবিক ছন্দে চলা এই জীবনে তাল কাটে যখন স্বামী কাজের কারণে প্রায়শই বাড়ির বাইরে থাকতে শুরু করেন। এই সুযোগে ভাগ্নের সঙ্গে ওই মহিলার বাড়িতে আসা-যাওয়া বাড়তে থাকে, যা ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠতায় রূপান্তরিত হয় এবং জন্ম নেয় এক নতুন সম্পর্কের।

**কোর্ট ম্যারেজ ও টানাপোড়েন:**

২০২৪ সালে এই সম্পর্ক এক নতুন মোড় নেয়। চার সন্তান এবং ২৫ বছরের স্বামীকে ছেড়ে মহিলা তাঁর ২৫ বছর বয়সী ভাগ্নের সঙ্গে কোর্ট ম্যারেজ করে একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন। এই খবর গ্রামে পৌঁছাতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। হতবাক স্বামী থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। কিছুদিন পর মহিলা স্বামীর কাছে ফিরে আসেন এবং তাঁর সঙ্গে থাকতে শুরু করেন।

কিন্তু গল্পের এখানেই শেষ নয়। কয়েক দিন পর ভাগ্নের পক্ষ থেকেও থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় যে কোর্ট ম্যারেজ করা সত্ত্বেও মহিলা তাঁর সঙ্গে থাকছেন না। এরপর আবারও একদিন মহিলা বাড়ি ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে চলে যান। গত রবিবার তারা দুজন আবারও গ্রামে ফিরে আসেন এবং সবার সামনে একটি পঞ্চায়েত বসে।

**পঞ্চায়েতে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত ও স্বামীর মহানুভবতা:**

পঞ্চায়েতে উপস্থিত গ্রামের প্রবীণ এবং আত্মীয়-স্বজনের সামনে মহিলা অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন যে, তিনি এখন তাঁর প্রেমিক ভাগ্নের সঙ্গেই থাকতে চান। কোর্ট ম্যারেজের নথিও তিনি সবার সামনে তুলে ধরেন এবং দৃঢ়ভাবে বলেন যে, এই সিদ্ধান্তে তাঁর উপর কোনো চাপ নেই, এটি তাঁর সম্পূর্ণ নিজস্ব সিদ্ধান্ত।

এই পরিস্থিতিতে স্বামী যে প্রতিক্রিয়া দেখান, তা উপস্থিত সবাইকে বিস্মিত করে। পঞ্চায়েতে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “যদি সে আমার সঙ্গে না থেকে অন্য কারও সঙ্গে থাকতে চায়, তাকে আটকানোর অধিকার আমার নেই।” সমাজের প্রচলিত সমস্ত ধারণা এবং পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতাকে দূরে ঠেলে তিনি স্ত্রীর স্বাধীনতাকে স্বীকার করে নেন, যা এক বিরল বড় মনের পরিচয়।

**পুলিশের বক্তব্য:**

ভবানীগঞ্জ থানার ইনচার্জ জানিয়েছেন, ওই মহিলা থানায় এসে কোর্ট ম্যারেজের নথি দেখিয়ে নিজের ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন। সমস্ত নথি যাচাই করে তাঁকে এবং তাঁর প্রেমিককে যেতে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা এখন গ্রাম পেরিয়ে wider আলোচনায় জন্ম দিয়েছে, যা সম্পর্কের সংজ্ঞা এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার গুরুত্ব নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে।
“`