বাংলাদেশের স্কুলে আছড়ে পড়লো বিমান, দুর্ঘটনায় মৃত বেড়ে ১৯, কীভাবে ভাঙল F-7?

ঢাকার উত্তরা এলাকায় এক মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাংলাদেশে। আজ সোমবার দুপুরে একটি স্কুল ভবনের উপর বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ প্রশিক্ষণ বিমান ভেঙে পড়লে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৭০ জন, যাদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা চলছে। এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় আগামীকাল, মঙ্গলবার, বাংলাদেশে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার।
সোমবার দুপুর আনুমানিক ১:৩০ মিনিটের ঘটনা। ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়ি এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসের উপর দিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমান। সে সময় স্কুলে ক্লাস চলছিল এবং ছুটির পর শিক্ষার্থীদের নেওয়ার জন্য অভিভাবকরা গেটে অপেক্ষা করছিলেন। হঠাৎই বিকট বিস্ফোরণের শব্দে এলাকা কেঁপে ওঠে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিমানটি খুব নিচু দিয়ে উড়ছিল এবং ভারসাম্য হারিয়ে প্রথমে একটি নারকেল গাছে ধাক্কা খায়, এরপর স্কুল ভবনে আছড়ে পড়ে। বিমান ভেঙে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ হয় এবং চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রাথমিকভাবে একজন নিহতের খবর এলেও, সময়ের সাথে সাথে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, নিহতের সংখ্যা ১৯-এ পৌঁছেছে এবং ৭০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। তাদেরকে দ্রুত ৬টি পৃথক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকার্য শুরু হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ বিমানের আঘাত এতটাই ভয়ানক ছিল।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার আগামীকাল মঙ্গলবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। এই দিনে দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। আহত ও নিহতদের জন্য দেশজুড়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের দপ্তর থেকে এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে একটি টুইট করা হয়েছে। টুইটে বলা হয়েছে, “রাজধানীর দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে আজ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ-৭বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। এই দুর্ঘটনায় বিমানসেনা ও মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক-কর্মচারীসহ অন্যান্যদের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। জাতির জন্য এটি একটি গভীর বেদনার ক্ষণ। আমি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি এবং সংশ্লিষ্ট হাসপাতালসহ সকল কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলার নির্দেশ প্রদান করছি। সরকার দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করবে।”
এই দুর্ঘটনা পুরো বাংলাদেশকে শোকস্তব্ধ করে দিয়েছে। উদ্ধার কাজ এবং আহতদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।