মমতার ‘জব্দ হবে, স্তব্ধ হবে’ হুঙ্কার, ২৮শে জুলাই নবান্ন অভিযানে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ২১শে জুলাইয়ের শহীদ সমাবেশ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর চিরাচরিত নরম সুর বদলে এবার কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধীদের। ‘বদলা নয়, বদল চাই’ স্লোগান থেকে সরে এসে তিনি ঘোষণা করলেন, “এবারের স্লোগান হবে জব্দ হবে, স্তব্ধ হবে।” মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো যখন ২৮শে জুলাই রাজ্য সরকারি চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী ও চাকরিহারাদের যৌথ মঞ্চ নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে, যা রাজ্যের রাজনৈতিক উত্তাপকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা: ‘বদলা নয়, বদল চাই’ থেকে ‘জব্দ হবে, স্তব্ধ হবে’

ধর্মতলার মঞ্চ থেকে বিরোধীদের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোজাসাপটা প্রশ্ন ছুড়ে দেন। তিনি বলেন, “কথায় কথায় আমার বাড়ির সামনে যাওয়া? কথায় কথায় নবান্ন অভিযান? তাহলে কথায় কথায় আপনাদের নেতাদের বাড়িতে অভিযান নয় কেন? আমরা তো এগুলো করিনি।” এরপরই তিনি তাঁর আগের স্লোগান ‘বদলা নয়, বদল চাই’-এর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “আমি আগে বলেছিলাম বদলা নয়, বদল চাই। তাই আপনাদের গায়ে হাত দেয়নি। এবারের স্লোগান হবে জব্দ হবে, স্তব্ধ হবে।” মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, তৃণমূল এবার বিরোধীদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে আরও কঠোর অবস্থান নিতে চলেছে।

২৮শে জুলাইয়ের নবান্ন অভিযান: চাকরিপ্রার্থীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন

মুখ্যমন্ত্রীর এই হুঙ্কারের মধ্যেই ২৮শে জুলাই ‘নবান্ন চলো’ অভিযানের ডাক দিয়েছে ‘বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী ও চাকরিহারা ঐক্য মঞ্চ’ এবং ‘সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ’। যোগ্য চাকরিহারাদের চাকরি ফেরত, শূন্যপদে নিয়োগ এবং বকেয়া ডিএ (Dearness Allowance) – সহ বিভিন্ন দাবিতে তারা আন্দোলনে নামছেন।

রাজ্য সরকারি চাকরিপ্রার্থী, চাকরিহারা ও চাকরিজীবীদের একাংশ দীর্ঘদিন ধরে রাস্তায় আন্দোলন করছেন। চাকরির দাবিতে আন্দোলন, চাকরিহারাদের আন্দোলন, বকেয়া ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন – এই সমস্ত দাবি আদায়ে এবার একজোট হয়েছে যৌথমঞ্চ, সংগ্রামী যৌথমঞ্চ এবং পশ্চিমবঙ্গ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী চাকরিজীবী ঐক্যমঞ্চ। এই তিনটি সংগঠনই ২৮শে জুলাই নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে, যা রাজ্য সরকারের জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা এবং চাকরিপ্রার্থীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক – এই দুইয়ের মাঝে ২৮শে জুলাইয়ের নবান্ন অভিযান রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন করে সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি করবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। সরকার এই আন্দোলনকে কীভাবে মোকাবিলা করে এবং বিরোধীরা এই সুযোগে কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।