“গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম”-দাবি করলেন পটনা শ্যুটআউটে ধৃত নিশু খান

পটনার পারস হাসপাতালে কুখ্যাত গ্যাংস্টার চন্দন মিশ্রকে গুলি করে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ধৃত পাঁচজন শুটারের অন্যতম নিশু খান দাবি করেছেন যে তিনি প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতেই কলকাতায় এসেছিলেন। রবিবার আলিপুর আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে থাকা অবস্থায় সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি এই চাঞ্চল্যকর দাবি করেন। এই গ্রেফতারি ঘিরে রাজ্য-রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নতুন করে চাপানউতোর।
নিশু খান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমার গার্লফ্রেন্ড এখানকার। তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম।” তিনি জানান, প্রথমে শাপুরজি এসেছিলেন, কিন্তু সেখানে তৌসিফের বন্ধুকে না পেয়ে পার্ক স্ট্রিটে যান। পার্ক স্ট্রিটে হোটেল না পেয়ে আনন্দপুরের একটি হোটেলে ওঠেন, যার হদিশ নাকি তার প্রেমিকা নিজেই দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতেই সেই হোটেল থেকে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।
শুধু প্রেমিকা নয়, নিশু খান আরও দাবি করেছেন যে তার বোনের বিয়ে হয়েছে কলকাতায়। সেই সূত্রে ২০২১ সাল থেকেই তার কলকাতায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল। এই বক্তব্য রাজ্যে দুষ্কৃতীদের আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ নিয়ে রাজনৈতিক তরজা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিজেপি শিবিরের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ পরিকল্পিতভাবেই দুষ্কৃতীদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হচ্ছে। যদিও এই দাবির প্রেক্ষিতে নিশূর বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।
পটনা শ্যুটআউটের জন্য কোনো টাকা নিয়েছেন কিনা, এই প্রশ্ন সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন নিশু খান। তার দাবি, তিনি বা তার ভাই কেউই এই কাজের জন্য কোনো টাকা নেননি।
ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে পরিচিত তৌসিফ প্রসঙ্গে নিশু বলেন, “তৌসিফ একবার ২০২২-এ জেলে চলে গিয়েছিল। তারপর কিছু ভুলভাল মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল। তারপর ও বাইরে আসার পর আমার উপর শুটআউট হয়েছিল। তারপর থেকে আমার সঙ্গেই ছিল।” নিশু খান আরও জানান, তৌসিফ তার থেকে বয়সে অনেক ছোট এবং এই কাজ কেন করেছে, বা বন্ধুর জন্য করেছে কিনা, তা তৌসিফই ভালো বলতে পারবে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে পটনার পারস হাসপাতালে ঢুকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন চন্দন মিশ্রকে গুলি করে হত্যা করা হয়। জানা গেছে, মৃত চন্দন মিশ্র নিজেও একজন গ্যাংস্টার ছিলেন। এই ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজে একটি সাদা গাড়ির সূত্র ধরে বিহার পুলিশ এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের যৌথ অভিযানে কলকাতার আনন্দপুরের একটি গেস্ট হাউস থেকে তৌসিফ, নিশু সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্র অনুযায়ী, চন্দন মিশ্রকে হত্যা করার পর ঘাতকরা ওই সাদা গাড়ি নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের একটি টোল প্লাজার সিসিটিভি ফুটেজে গাড়িটির ছবি ধরা পড়ার পর তদন্ত শুরু হয়। এর ভিত্তিতেই রাজ্য পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা অভিযুক্তদের ধরতে সক্ষম হন। গ্রেফতারকৃতদের বর্তমানে জেরা করা হচ্ছে এবং এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের মূল উদ্দেশ্য ও অন্যান্য জড়িতদের সম্পর্কে জানার চেষ্টা চলছে।