“অসুস্থ একের পর এক প্রসূতি”-ফের ভুল ইঞ্জেকশনের অভিযোগ, এবার বালুরঘাট হাসপাতালে

বালুরঘাট সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে ‘ভুল ইনজেকশন’ দেওয়ার অভিযোগ উঠল। শুক্রবার রাতে এই ঘটনায় হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি প্রায় ৮ থেকে ১০ জন প্রসূতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। এই ঘটনা ঘিরে হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়।
অসুস্থ প্রসূতিদের পরিবারের অভিযোগ, শুক্রবার রাতে প্রসূতিদের একটি নির্দিষ্ট ইনজেকশন দেওয়া হয়। এরপরই একে একে সকল প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে কাঁপুনি, শ্বাসকষ্ট এবং ছটফট করার মতো উপসর্গ দেখা যায়। হাসপাতালে ভর্তি এক প্রসূতির স্বামী সৌমেন দাস বলেন, “আমার স্ত্রীও প্রসূতি বিভাগে ভর্তি আছেন। ইনজেকশন দেওয়ার পরই সকলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমরা এর প্রতিবাদ করলে আমাদের বের করে দেওয়া হয়।”
ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই হাসপাতালে ছুটে আসেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস সহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বালুরঘাট থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাস সহ বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
অসুস্থ প্রসূতিদের বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। মধ্যরাতে দুজনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের সিসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ঠিক কী কারণে প্রসূতিরা অসুস্থ হলেন, তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।
উল্লেখ্য, এর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়ার ঘটনায় শিরোনামে এসেছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি, মেদিনীপুর মেডিক্যালে পাঁচ প্রসূতি মেয়াদোত্তীর্ণ রিঙ্গার্স ল্যাকটেট স্যালাইনে অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ ওঠে। তাদের মধ্যে মামণি রুইদাস নামে এক প্রসূতির সন্তান জন্ম দেওয়ার পরপরই মৃত্যু হয়। বাকি চারজনের মধ্যে রেখা সাউ ছাড়া মাম্পি সিং, মিনারা বিবি এবং নাসরিন খাতুনকে চিকিৎসার জন্য কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে হয়েছিল। দীর্ঘ চিকিৎসার পর মাম্পি ও মিনারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন।
বালুরঘাটের এই নতুন ঘটনা সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীদের নিরাপত্তা এবং ব্যবহৃত ওষুধের মান নিয়ে আবারও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।