“জয় শ্রী রাম করে ঠকেছে বিজেপি”-PM Modi-র জয়ধ্বনি নিয়ে যা বললেন অধীর চৌধুরী

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখে ‘জয় মা কালী, জয় মা দুর্গা’ স্লোগান ওঠার পরপরই পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে তীব্র বাদানুবাদ। ‘জয় শ্রীরাম’ ছেড়ে প্রধানমন্ত্রী কেন এই নতুন স্লোগান দিলেন, তা নিয়ে যখন জল্পনা তুঙ্গে, তখন এই বিষয়ে মুখ খুললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তাঁর স্পষ্ট মন্তব্য, “এর আগে বাংলায় জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীরাম করে ঠকেছে বিজেপি। তাই শুধরেছে তারা। এই বাংলায় রামই কৃষ্ণ। যুগ যুগ ধরে বাংলায় মাতৃশক্তির বন্দনা করা হয়ে এসেছে। বাঙালির সঙ্গে দুর্গার আত্মিক সম্পর্ক। যেটা মার্কেটে খাবে, সেটাই স্লোগান হবে।”
শুক্রবার দুর্গাপুরের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী মোদী যখন তাঁর চিরাচরিত ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান বাদ দিয়ে ‘জয় মা কালী, জয় মা দুর্গা’ ধ্বনি দেন, তখন থেকেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় জোর আলোচনা। অনেকেই এটিকে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বাঙালি আবেগ ও মাতৃশক্তির আরাধনার প্রতি বিজেপির কৌশলগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।
অধীর চৌধুরীর এই বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর স্লোগান বদলের পেছনে বিজেপির রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশকেই তুলে ধরছে। তাঁর মতে, ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান বাংলায় প্রত্যাশিত ফল না দেওয়ায় বিজেপি এখন তাদের কৌশল বদলাতে বাধ্য হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, বাংলার সংস্কৃতিতে যুগ যুগ ধরে মাতৃশক্তির আরাধনা চলে আসছে এবং মা দুর্গার সঙ্গে বাঙালির এক আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে।
অধীরের “এই বাংলায় রামই কৃষ্ণ” মন্তব্যটিও তাৎপর্যপূর্ণ। এর মধ্য দিয়ে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, বাংলায় ধর্মীয় চেতনার যে গভীরতা ও ভিন্নতা রয়েছে, তা শুধু একটি নির্দিষ্ট দেবতাকে কেন্দ্র করে নয়, বরং বিভিন্ন দেব-দেবী এবং তাঁদের প্রতি বাংলার মানুষের ভক্তি ও শ্রদ্ধাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রীর এই নতুন স্লোগানকে অধীর চৌধুরী স্রেফ একটি ‘মার্কেটিং কৌশল’ হিসেবেই দেখছেন। তাঁর ভাষায়, “যেটা মার্কেটে খাবে, সেটাই স্লোগান হবে,” যা স্পষ্টতই ইঙ্গিত করে যে, ভোটের রাজনীতিতে স্লোগানের ব্যবহার দলগুলোর কাছে একটি হিসাব কষা পদক্ষেপ মাত্র।
সামনে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে প্রধানমন্ত্রীর স্লোগান বদল এবং বিরোধী শিবিরের এই ধরনের প্রতিক্রিয়া নিঃসন্দেহে বাংলার রাজনীতিতে ধর্মীয় আবেগ, আঞ্চলিক সংস্কৃতি ও ভোটের কৌশলের সংমিশ্রণ আরও তীব্র করে তুলবে।