শুভেন্দুর জোড়া আক্রমণ, ‘হিন্দু শরণার্থীদের রক্ষা করতে হবে’ এবং ‘উত্তরকন্যা বন্ধ হলে ২১শে জুলাইও বন্ধ হোক!’

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আজ দ্বিমুখী আক্রমণ শানালেন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। একদিকে তিনি ‘বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু শরণার্থীদের রক্ষা করার’ কথা বললেন, অন্যদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে ‘উত্তরকন্যা অভিযান’-এর অনুমতি না মেলায় ২১শে জুলাইয়ের তৃণমূলের সভার অনুমতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

হিন্দু শরণার্থী ও বিজেপি জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু শরণার্থীদের রক্ষা করতে হবে।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন বা CAA-এর মতো বিষয়গুলিকে ফের সামনে আনার চেষ্টা করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

পাশাপাশি, রাজ্যে বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের উপর হামলার ঘটনা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের ওপর কেন হামলা? প্রশাসনের ডাকা সর্বদল বৈঠকেও বিজেপির ওপর হামলা। বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না পুলিশ।” এর মাধ্যমে তিনি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং শাসক দলের ‘সন্ত্রাসের রাজনীতি’র অভিযোগ তোলেন।

‘উত্তরকন্যা’ বনাম ‘২১শে জুলাই’: শুভেন্দুর সরাসরি চ্যালেঞ্জ
রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার ডাকা ‘উত্তরকন্যা অভিযান’-এর জন্য পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন শুভেন্দু। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট ২১শে জুলাই কলকাতায় তৃণমূলের পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশের কারণে ‘উত্তরকন্যা অভিযান’-এর অনুমতি বাতিল করেছে। এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “২১ জুলাই উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) একাই বক্তৃতা করবেন নাকি! গণতান্ত্রিক দেশ তো। তাও তো বিজেপি দক্ষিণবঙ্গে করেনি, উত্তরবঙ্গে করেছে। এখন তো রাজতন্ত্র নেই। উনি একাই সব করবেন।”

শুভেন্দুর স্পষ্ট দাবি, “২১ যদি কলকাতাতে হয়, তাহলে শিলিগুড়িতে হওয়া উচিত। শিলিগুড়ি যদি বন্ধ হয় তাহলে কলকাতাতেও বন্ধ হওয়া উচিত। এটা তো রাজনৈতিক কর্মসূচি।” তিনি ইঙ্গিত দেন যে, এই বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তিনি বলেন, “যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোর্ট নেবে। ২১ তারিখ যদি বন্ধ হয়, তাহলে দুটোই কোর্ট বন্ধ করুক।” পুলিশের দেওয়া ২০ ও ২২ জুলাইয়ের তারিখ প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “পুলিশ, সরকারি আইনজীবী বলেছে ২০ এবং ২২ জুলাই। ২০-তে তৃণমূল করবে, ২২-এ আমরা উত্তরকন্যা করব।”

২১শে জুলাইয়ের সভার রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শুভেন্দু বলেন, “২১ জুলাই নিয়ে ওঁর কী? এ তো যুব কংগ্রেসের প্রোগ্রাম। প্রোগ্রাম ছিল কংগ্রেসের, গুলি করেছিল সিপিএম, মঞ্চ বাঁধছে তৃণমূল, গালাগালি করবে বিজেপিকে।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি তৃণমূলের ২১শে জুলাইয়ের কর্মসূচিকে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেন।

শুভেন্দুর এই জোড়া আক্রমণ আগামী দিনে রাজ্যের রাজনীতিতে আরও উত্তাপ বাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। হিন্দু শরণার্থী ইস্যু এবং রাজনৈতিক কর্মসূচির অনুমতি নিয়ে এই সংঘাত সম্ভবত বিচারালয় পর্যন্ত গড়াতে পারে।