“রাজা রঘুবংশীর মতো মরতে চাই না”, স্ত্রীর পরকীয়া আঁচ পেতেই ডিভোর্সের আবেদন যুবকের

আজকাল সংবাদমাধ্যমে প্রায়শই প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা শিরোনামে উঠে আসছে। কোথাও ব্ল্যাক ম্যাজিক ও মাদকাসক্তি, কোথাও বা সম্পর্কের বনিবনার অভাব, আবার কোথাও সম্পত্তির লোভ – বিভিন্ন কারণে এই ধরনের অপরাধ ঘটছে। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে রাজা রঘুবংশী হত্যাকাণ্ড গোটা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে, যদিও অভিযুক্তদের এখনো শাস্তি দেওয়া হয়নি। এবার ভোপালের একটি পারিবারিক আদালতে এক চাঞ্চল্যকর বিবাহবিচ্ছেদের মামলা সামনে এসেছে, যেখানে একজন স্বামী তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন যে, তিনি “রাজার মতো মরতে চান না।” তিনি ইন্দোরের বহু চর্চিত রাজা রঘুবংশী ও সোনম রঘুবংশী হত্যা মামলার কথা উল্লেখ করে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, তাঁর স্ত্রীও সোনমের মতো আচরণ করতে পারেন, কারণ স্ত্রীর গতিবিধি সন্দেহজনক।

পারিবারিক আদালতের কাউন্সেলর নূরুন্নিসা খান গণমাধ্যমকে জানান, এই দম্পতির বিয়ে হয়েছিল প্রায় পাঁচ বছর আগে। দু’জনেই বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। গত দু’বছর ধরে তাঁরা আর একসঙ্গে থাকছেন না। প্রাথমিকভাবে স্ত্রী খুব বেশি শিক্ষিত ছিলেন না, কিন্তু স্বামী তাঁকে চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র শিখিয়েছিলেন। এর পর স্ত্রী ভোপালের কাছে একটি কারখানায় চাকরি পান। এখান থেকেই স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে ফাটল দেখা দিতে শুরু করে।

স্বামীর অভিযোগ, চাকরি শুরু করার পর স্ত্রী এক সহকর্মীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন। স্বামী যখন তাঁকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন, তখন স্ত্রী জবাবদিহিতে অস্বীকার করেন, ফলে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। স্বামী বলেন, এই উত্তেজনার কারণে স্ত্রী প্রায় দুই বছর আগে তাঁকে ছেড়ে চলে যান এবং আলাদাভাবে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করেন।

এহেন পরিস্থিতিতে স্বামী বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেছেন। যদিও স্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলছেন, তাঁর কারও সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই, তিনি তাঁর ওই পুরুষ সহকর্মীর সঙ্গে কেবল কাজের বিষয়েই কথা বলেন। স্ত্রীর দাবি, তিনি এখনও স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান।

কাউন্সেলর খান বলেন, ইদানীং বৈবাহিক জীবনে অবিশ্বাস ও সন্দেহের কারণে বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ইন্দোরের ঘটনার পর এখন পুরুষরাও ভীত হয়ে পড়েছেন। খানের মতে, এখন অনেক পুরুষ সম্পর্কের ক্ষেত্রে আপোস করার পরিবর্তে বিবাহবিচ্ছেদকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। এই ঘটনাটি সমাজে সম্পর্কের জটিলতা এবং পুরুষদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতার এক নতুন দিক তুলে ধরছে।