“সঞ্জয় চায় বেকসুর খালাস হতে”-RG Kar কান্ডে অভিযুক্তর মামলা গ্রহণ করল হাইকোর্ট

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত বরখাস্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রাই এবার নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন। তাঁর আইনজীবী দাবি করেছেন যে, গোটা তদন্ত কেবল অনুমানের ওপর দাঁড়িয়ে, এবং সিসিটিভি ফুটেজে সঞ্জয়ের উপস্থিতি থাকলেও, অপরাধের সরাসরি কোনো প্রমাণ নেই। কলকাতা হাইকোর্ট সঞ্জয় রাইয়ের এই আপিল আবেদন গ্রহণ করেছে। সিবিআই-এর দায়ের করা মামলার সঙ্গেই সঞ্জয় রাইয়ের মামলার শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে সেপ্টেম্বর মাসে।
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে সঞ্জয় রাইয়ের মামলাটি গৃহীত হয়। হাইকোর্ট এদিন আরও জানায় যে, নির্যাতিতার পরিবার চাইলে এই মামলায় আদালতকে সহযোগিতা করতে পারবে।
সঞ্জয় রাইয়ের আইনজীবীর প্রধান যুক্তি হলো, সিসিটিভি ফুটেজে সঞ্জয়কে হাসপাতালের তিনতলায় দেখা গেলেও, অপরাধের নির্দিষ্ট সময়, অর্থাৎ ৪টা ৩৬-এর পরে তাঁর আর কোনো উপস্থিতি নেই। আদালতে সঞ্জয় রাইয়ের আইনজীবী সওয়াল করেন যে, বর্তমান সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণিত হয় না এবং তাঁর মক্কেলকে বেকসুর খালাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
মামলার প্রেক্ষাপট ও নিম্ন আদালতের রায়
চলতি বছরের ১৮ই জানুয়ারি শিয়ালদা আদালত সঞ্জয় রাইকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ ধারায় (ধর্ষণ), ৬৬ ধারায় (ধর্ষণের জন্য মৃত্যু) এবং ১০৩ (১) ধারায় (খুন) দোষী সাব্যস্ত করে। এরপর ২০শে জানুয়ারি তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। এই মামলায় নির্যাতিতার পরিবার ও সিবিআই দোষীর ফাঁসির দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু বিচারক সেই সময় মন্তব্য করেছিলেন যে, ফাঁসির সাজা কেবল “বিরলের মধ্যে বিরলতম” মামলাতেই দেওয়া হয় এবং আরজি করের ঘটনা “রেয়ারেস্ট অফ দ্য রেয়ার” নয়।
উল্লেখ্য, আরজি করের চিকিৎসক তরুণীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার এক বছর হতে চলেছে। গত ৯ই আগস্ট সকালে আরজি কর হাসপাতালের চারতলার সেমিনার রুমের মধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। এই ঘটনা রাজ্য তথা দেশে ব্যাপক শোরগোল ফেলে দেয়। ঘটনার দ্রুত বিচার ও দোষীর গ্রেফতারির দাবিতে আরজি কর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকরা আন্দোলনে নামেন। ঘটনার পরেই কলকাতা পুলিশের হাতে ওই হাসপাতালের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রাই গ্রেপ্তার হন। এরপর ১৪ই আগস্ট আদালতের নির্দেশে এই ঘটনার তদন্তভার নেয় সিবিআই। এই ঘটনায় হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছিল; তিনি বর্তমানে দুর্নীতির অভিযোগে জেল হেফাজতে রয়েছেন।
সঞ্জয় রাইয়ের এই আপিল আবেদন গ্রহণ করায় মামলাটি আবারও আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে, এবং সেপ্টেম্বরের শুনানির দিকে সবার নজর থাকবে।