মহাকাশ থেকে মাটির টানে ভারতের গর্ব শুভাংশু শুক্লার “পৃথিবীতে প্রথম পা রাখার মুহূর্তের সেই ছবি”

ক্যালিফোর্নিয়া, আমেরিকা: দীর্ঘ ১৮ দিনের মহাজাগতিক অভিযান শেষ করে অবশেষে পৃথিবীতে ফিরলেন ভারতের গর্ব, ভারতীয় বিমানবাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা। ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (ISS)-এ ভারতের প্রথম মহাকাশচারী হিসেবে পা রেখে যিনি ইতিহাস গড়েছিলেন, মঙ্গলবার দুপুর তিনটে নাগাদ সহকর্মী মহাকাশচারীদের নিয়ে তার বহনকারী ড্রাগন মহাকাশযান আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার সমুদ্রে নিরাপদে অবতরণ করে। সমুদ্র থেকে ড্রাগনের ক্যাপসুলটিকে ডাঙায় আনার পর ক্যাপসুল খুলে বের করে আনা হয় মহাকাশচারীদের।

১৮ দিন পর মাটির স্পর্শ, স্বদেশের পতাকা বুকে
শুভাংশু শুক্লা ছিলেন মহাকাশযান থেকে বেরিয়ে আসা দ্বিতীয় ব্যক্তি। ১৮ দিন ধরে সূক্ষ্ম মাধ্যাকর্ষণে ভেসে থাকার পর, পৃথিবীর টানে নিজের ওজনের অনুভূতি যেন এক নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে এলো তার কাছে। ক্যাপসুল থেকে বেরিয়ে আসার সময় চারজনের সাহায্যে তিনি মাটিতে পা রাখেন। তার মুখে ছিল এক উজ্জ্বল হাসি, যা তার ঐতিহাসিক সাফল্যের আনন্দ এবং স্বভূমিতে ফেরার স্বস্তি প্রকাশ করছিল। সাদা স্পেস স্যুটে সজ্জিত শুভাংশুর বুকে গর্বের সঙ্গে শোভা পাচ্ছিল ভারতের তেরঙ্গা পতাকা, যা দেশের জন্য তার এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের প্রতীক।

ভিডিওতে আবেগঘন মুহূর্ত: হাত নেড়ে অভিবাদন
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ১৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে ধরা পড়েছে এই আবেগঘন মুহূর্তটি। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শুক্লা সাদা স্পেস স্যুটে ক্যাপসুল থেকে বেরিয়ে আসছেন এবং তার মুখে সেই বিস্তৃত হাসি। তিনি হাত নেড়ে উপস্থিত সকলকে অভিবাদন জানাচ্ছেন। এসময় মহাকাশচারীদের বের করার কাজে যুক্ত কর্মীরা তাকে সাবধানে সহায়তা করছেন, যাতে দীর্ঘ সময় মাধ্যাকর্ষণহীন পরিবেশে থাকার পর তিনি নিরাপদে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন। এই দৃশ্যটি কেবল একটি সফল প্রত্যাবর্তনের মুহূর্ত ছিল না, ছিল ভারতের মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে এক স্বর্ণালী অধ্যায়ের সাক্ষী।

এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন
শুভাংশু শুক্লার এই সফল মিশন ভারতের মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ISS-এ তার অভিজ্ঞতা এবং সেখানে সম্পন্ন করা পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলি ভারতের ভবিষ্যৎ মহাকাশ অভিযান, বিশেষ করে গগনযান মিশনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করবে। ১৮ দিন মহাকাশে কাটিয়ে শুভাংশু শুক্লা কেবল একজন মহাকাশচারী হিসেবেই নন, বরং ভারতের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির এক জীবন্ত প্রতীক হিসেবে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন। তার এই প্রত্যাবর্তন গোটা দেশকে নতুন করে মহাকাশ গবেষণার স্বপ্নে বিভোর করে তুলেছে।