“চলো আমরা…”- স্কুল ছাত্রীকে নিয়মিত অশ্লীল মেসেজ, গ্রেপ্তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক

কসবার আইন কলেজের ধর্ষণের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবং আইআইএম কলকাতার ক্যাম্পাসে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শিক্ষাঙ্গনে ফের গুরুতর অভিযোগ। এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে এক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নাবালিকা ছাত্রীকে অশ্লীল হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠানোর অভিযোগ উঠল। পুলিশ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক লক্ষণ লামাকে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যানিংয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ক্যানিংয়ের একটি বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক লক্ষণ লামার বিরুদ্ধে তার স্কুলেরই এক নাবালিকা ছাত্রীকে নিয়মিত আপত্তিকর হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবারের দাবি, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে ওই ছাত্রীকে উত্যক্ত করে আসছিলেন। সম্প্রতি, একটি মেসেজে স্পষ্টভাবে লেখা ছিল, ‘গুড মর্নিং, মাই ডিয়ারেস্ট ফ্রেন্ড… চলো আমরা…’। এই ধরনের বার্তার মাধ্যমে শিক্ষক তার পদের অপব্যবহার করে ছাত্রীর প্রতি কু-ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ।
প্রাথমিকভাবে মেয়েটি বিষয়টি গোপন রাখলেও, শেষ পর্যন্ত সে তার পরিবারের কাছে সব খুলে বলে। এরপর আর দেরি না করে ছাত্রীর পরিবার ক্যানিং থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার ক্যানিং থানার পুলিশ দ্রুত স্কুলে পৌঁছায়। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক লক্ষণ লামাকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তার মোবাইল ফোন-সহ একাধিক ইলেকট্রনিক ডিভাইস খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এই ঘটনা জানাজানি হতেই গোটা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। স্কুলের অন্যান্য অভিভাবকদের মধ্যেও তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়। তাদের বক্তব্য, “যিনি শিক্ষাদানের দায়িত্বে, তিনিই যদি এমন নোংরামো করেন, তবে শিশুদের ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?” তারা অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়কও। ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশ রাম দাস বলেন, “এই ধরনের অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আইন অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।”
একদিকে কসবার আইন কলেজের ঘটনা, অন্যদিকে আইআইএম ক্যাম্পাসে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এবং তার মধ্যেই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ – এই ঘটনাগুলি রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনের নিরাপত্তা এবং নৈতিকতা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন তুলে দিল। এই পরিস্থিতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।