মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ত্রুটি, প্রাণ গেল শতাধিক! আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করল AAIB

মাত্র কয়েক সেকেন্ডের যান্ত্রিক ত্রুটি—আর সেই মুহূর্তary বিভ্রাটেই শেষ হয়ে গেল শতাধিক যাত্রীর জীবন। শনিবার মধ্যরাতে প্রকাশিত এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (AAIB)-র প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনই ভয়ঙ্কর তথ্য।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিমানটি টেক-অফ করার কিছু মুহূর্তের মধ্যেই আচমকা দু’টি ইঞ্জিনই বন্ধ হয়ে যায়। প্রযুক্তিগত ভাষায়, ইঞ্জিনের ফুয়েল সুইচ কয়েক সেকেন্ডের জন্য RUN থেকে CUTOFF-এ চলে যায়। খুব দ্রুতই আবার তা চালু হলেও, ততক্ষণে বিপদের সূচনা হয়ে গিয়েছে। আকাশে বিমানের ভারসাম্য ধরে রাখার জন্য যে সময় প্রয়োজন ছিল, তার অনেক আগেই নিয়ন্ত্রণ হারান পাইলটরা। ফল—মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে অসংখ্য যাত্রী।

প্রশ্ন উঠছে—এই ভয়াবহ ত্রুটি কীভাবে ঘটল? বিশেষত, টাটা গোষ্ঠীর অধীনে এয়ার ইন্ডিয়া আসার পর কি যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছিল? এএআইবি জানায়, ২০১৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) একটি বিশেষ সতর্কতা নির্দেশিকা (SAIB) জারি করেছিল। যেখানে এই ধরনের ফুয়েল সুইচ লক হওয়ার সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং তা প্রতিরোধের উপায় জানানো হয়েছিল।

কিন্তু সেই নির্দেশিকা এয়ার ইন্ডিয়া কার্যত অগ্রাহ্য করে। তাদের যুক্তি ছিল, এটি একটি সুপারিশমাত্র—আইনি বাধ্যবাধকতা নয়। এর ফলেই ঘটে বিপর্যয়।

তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, বিমানের থ্রটল কন্ট্রোল মডিউল—যা ককপিটের ফুয়েল সুইচ ও ইঞ্জিনের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে—তা ২০১৯ ও ২০২৩ সালে বদলানো হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু মূল ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ প্যানেলটি সেই সময় অপরিবর্তিত ছিল। সমস্যার মূল কারণ ছিল সেই পুরনো প্যানেলেই।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছিল, হয়তো বিমানের ডানার (ফ্ল্যাপ) অবস্থান বা ওজনবন্টনে গোলমাল হয়েছিল। কিন্তু AAIB সেই অনুমান নস্যাৎ করেছে। তাদের স্পষ্ট দাবি, উড়ানের সময় ওজন বন্টন এবং ফ্ল্যাপের অবস্থান একদম নিয়মমাফিকই ছিল।

এক মুহূর্তের অবহেলা বা সিদ্ধান্ত—যা বদলে দিল শতাধিক পরিবারের ভবিষ্যৎ। এই তদন্ত রিপোর্ট বহু প্রশ্নের উত্তর দিলেও, ফের একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবস্থায় নিয়মভঙ্গ কতটা মারাত্মক হতে পারে।