গত এক মাসে বিশ্বের নানা প্রান্তে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে জমি। এবার সেই তালিকায় নাম লেখাল ভারতও। মঙ্গলবার সকালে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য আসামে অনুভূত হল মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে এর তীব্রতা ছিল ৪.২। সৌভাগ্যবশত, এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর মেলেনি।
আসামে ভূমিকম্প, আতঙ্কে স্থানীয়রা
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (USGS) তথ্য অনুযায়ী, সকাল ৯টা ২২ মিনিটে আসামের মাঞ্জা এলাকায় এই কম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের উৎসস্থল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিমি গভীরে ছিল। যদিও ঝাঁকুনি হালকা ছিল, তবে আতঙ্কে অনেকেই ঘরবাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন।
উল্লেখ্য, এর আগেও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আসামে ভূমিকম্প হয়েছিল। তখন রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.০, যা গুয়াহাটি, নাগাঁও ও তেজপুরে স্পষ্টভাবে অনুভূত হয়।
এশিয়ার অন্যান্য দেশেও কম্পন
ভারতের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ নেপাল ও পাকিস্তানেও সম্প্রতি ভূমিকম্প হয়েছে।
৩০ জুন নেপালে ৩.৯ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। আতঙ্কে অনেকেই ঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন, যদিও ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি।
২৯ জুন পাকিস্তানে ভোররাতে (৩:৫৪ মিনিটে) ভূমিকম্প হয়, যার মাত্রা ছিল ৫.৩। সেখানেও প্রাথমিকভাবে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানানো হয়েছে।
ভারতে অতীতের ভয়াবহ ভূমিকম্পের নজির
ভারতের ভূমিকম্পের ইতিহাস রীতিমতো ভীতিকর।
২০০১ সালের ভূজ (গুজরাট): ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল।
২০০৫ সালের কাশ্মীর ভূমিকম্প: উত্তর ভারতে ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
২০১১ সালের সিকিম ভূমিকম্প: রিখটার স্কেলে ৬.৯ মাত্রার এই ভূমিকম্পে বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন।
মণিপুর-এর ভূমিকম্পগুলিও ভয়াবহ ক্ষতির নজির রেখে গেছে।
বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?
ভূতাত্ত্বিকদের মতে, ভারতবর্ষ ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলের মধ্যে পড়ে, বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চল, হিমালয়ের পাদদেশ এবং উত্তর ভারত। টেকটোনিক প্লেটগুলির নড়াচড়ার ফলে এই ধরনের ভূমিকম্প বারবার হতে পারে।