বন্ধুত্বের অবিশ্বাস্য নজির! নিজের অণ্ডকোষ ‘গিফট’ করে মার্কিন বন্ধুর প্রাণ বাঁচালেন ভারতীয় যুবক

মানুষের জীবন বাঁচাতে অঙ্গদানের গুরুত্ব অপরিসীম, কিন্তু এবার এক ভারতীয় যুবক অঙ্গদানের যে নজির সৃষ্টি করলেন, তা সত্যিই অভাবনীয়। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ২৯ বছর বয়সী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার অভিজিৎ সেন নিজের একটি অণ্ডকোষ দান করে তাঁর মরণাপন্ন মার্কিন বন্ধু জ্যাক হ্যারিসনের জীবন বাঁচিয়েছেন। চিকিৎসকরা এই ঘটনাকে ‘ঐতিহাসিক নজির’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
নিউ জার্সির বাসিন্দা অভিজিৎ সেনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং সহকর্মী, মার্কিন নাগরিক জ্যাক হ্যারিসন এক বিরল অণ্ডকোষজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। প্রথম অণ্ডকোষটি অস্ত্রোপচার করে বাদ দেওয়ার পরও সংক্রমণ দ্বিতীয়টিতেও ছড়িয়ে পড়েছিল। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, দ্রুত প্রতিস্থাপন করা না গেলে জ্যাকের জীবনসঙ্কট অবশ্যম্ভাবী।
এই সংকটময় মুহূর্তে জ্যাকের পাশে দাঁড়ান অভিজিৎ। বন্ধুর জীবন বাঁচাতে তিনি নিজের একটি সুস্থ অণ্ডকোষ দান করার সিদ্ধান্ত নেন। বিষয়টি অত্যন্ত জটিল হলেও, কঠিন মেডিক্যাল প্রোটোকল, কঠোর নৈতিক অনুমোদন প্রক্রিয়া এবং একাধিক শারীরিক ও মানসিক মূল্যায়নের পর নিউ ইয়র্কের এক স্বনামধন্য হাসপাতালে সফলভাবে সম্পন্ন হয় এই জটিল অঙ্গ প্রতিস্থাপন।
এই সফল প্রতিস্থাপন প্রসঙ্গে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রে জীবিত, সম্পর্কহীন ব্যক্তিদের মধ্যে প্রথম সফল টেসটিকুলার প্রতিস্থাপন। তাঁদের মতে, প্রযুক্তিগত ও মানসিক উভয় দিক থেকেই এটি এক অসাধারণ কৃতিত্ব এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
নিজের এই মহৎ কাজের বিষয়ে অভিজিৎ সেন বলেন, “জ্যাক শুধু আমার বন্ধু নয়, সে আমার পরিবারেরই একজন। আমি কেবল সেটাই করেছি যা একজন মানুষ হিসেবে আমার করা উচিত ছিল।”
এই ঘটনার পর অভিজিৎ সেন দ্রুত সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে সাহস, বন্ধুত্ব এবং মানবিকতার প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। নেটিজেনদের একাংশ তাঁর প্রশংসা করে লিখেছেন, “আজকের পৃথিবীতে এমন খবরই আমাদের মানুষ হিসেবে বিশ্বাস ফেরায়।” বিজ্ঞানের অগ্রগতি আর মানুষের অদম্য সহমর্মিতা আরও একবার প্রমাণ করল যে, জীবন বাঁচাতে ভালোবাসার চেয়ে বড় অস্ত্র আর কিছু হতে পারে না।