সোনা বাজারের অস্থিরতা! ১ ভরিতে আজ কত খরচ হবে? স্বস্তি মিলবে ক্রেতাদের?

জুলাই মাসের শুরুতেই সোনার বাজার যেন ‘রোলার কোস্টার’ রাইডের মতো আচরণ করছে। গতকাল, মঙ্গলবার, মাত্র একদিনের মধ্যে দু’বার পরিবর্তন হয়েছে সোনার দামে, যা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই বিস্মিত করেছে। সকালে কিছুটা দাম কমলেও, সন্ধ্যার দিকে অপ্রত্যাশিতভাবে লাফিয়ে বাড়ে হলুদ ধাতুর দর। তবে, আজকের দিনটি অর্থাৎ ২ জুলাই, বুধবার, সোনা ক্রেতাদের জন্য কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে। গতকালের উচ্চতার পর আজ সকালে সোনার দামে কিছুটা পতন দেখা গেছে, যা পকেটে কিছুটা টান কমাতে সাহায্য করবে।

আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের বিপরীতে ভারতীয় টাকার বিনিময় হার, অপরিশোধিত তেলের মূল্য এবং বিশ্ব অর্থনীতির গতিপ্রকৃতির উপর নির্ভর করে সোনার দাম প্রতিনিয়ত ওঠানামা করে। বাংলার বাজারেও এর ব্যতিক্রম নয়। আজ ১ ভরি সোনা কিনতে সামান্য হলেও কম খরচ হবে।

আজকের বাজার দর (২ জুলাই, ২০২৫):

সোনা

ওজন

দাম (টাকায়)

২৪ ক্যারেট (Fine Gold 995)

১ গ্রাম

৯৭১১

২২ ক্যারেট (কিনতে গেলে)

১ গ্রাম

৯২২৫

২২ ক্যারেট (বেচতে গেলে)

১ গ্রাম

৮৮৩৭১

১৮ ক্যারেট

১ গ্রাম

৭৫৭৫

রূপো (৯৯৯)

১ কেজি

১,০৬,১৩৫

Export to Sheets
উল্লেখযোগ্য: ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটি, যার বর্তমান কার্যনির্বাহী সভাপতি সমর কুমার দে, স্বর্ণশিল্পী ও স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে চলেছে।

শুভ ও বিনিয়োগের প্রতীক: ভারতীয় সংস্কৃতিতে সোনার স্থান

ভারতে সোনা কেনা শুধু একটি আর্থিক লেনদেন নয়, এটি সৌভাগ্য ও শুভত্বের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠান বা শুভ কাজে সোনা কেনা বা উপহার দেওয়ার এক দীর্ঘকালীন ঐতিহ্য রয়েছে। এছাড়া, অনেকেই সোনাকে একটি নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে দেখে থাকেন, যেখানে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে মুনাফা লাভের সম্ভাবনা থাকে। তবে, গয়নার ক্ষেত্রে তৈরির খরচ বা মেকিং চার্জ যুক্ত হওয়ায় মোট ব্যয় অনেকটাই বেড়ে যায়।

২৪ ক্যারেট সোনাকে সবচেয়ে বিশুদ্ধ সোনা ধরা হয়, যা সাধারণত গয়না তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয় না। যারা সঞ্চয়ের উদ্দেশ্যে সোনার বার বা কয়েন কেনেন, তারাই মূলত এই বিশুদ্ধ সোনা পছন্দ করেন।

গয়না কেনার আগে হলমার্কের গুরুত্ব:

সোনার গয়না কেনার সময় হলমার্ক দেখে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। হলমার্কে জুয়েলারের শনাক্তকরণ চিহ্ন, হলমার্কিংয়ের বছর, ক্যারেট এবং ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস (BIS)-এর স্ট্যাম্প স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে। BIS স্ট্যাম্প একটি সরকারি সার্টিফিকেট, যা নিশ্চিত করে যে গয়নাটি ব্যুরো কর্তৃক নির্ধারিত মান অনুসারে তৈরি হয়েছে। এর পাশাপাশি, জুয়েলারদের ব্যক্তিগত হলমার্কও থাকে, যেখানে ধাতুর বিশুদ্ধতা এবং তৈরির বছর লেখা থাকে। হলমার্কযুক্ত গয়না ক্রেতাকে তার কেনা সোনার বিশুদ্ধতা এবং গুণমান সম্পর্কে নিশ্চিত করে।

সোনার বাজারের এই ওঠানামা ক্রেতাদের জন্য মিশ্র বার্তা নিয়ে এলেও, বিনিয়োগকারীরা এবং সাধারণ ক্রেতারা উভয়ই বাজার পরিস্থিতির উপর সতর্ক নজর রাখছেন, কারণ সোনার দামের প্রতিটি পরিবর্তনই তাদের আর্থিক পরিকল্পনায় প্রভাব ফেলে।