ট্রেনের Tatkal Ticket Booking নিয়ম বদলে যাচ্ছে ১ জুলাই, টিকিট কেনার আগে জেনেনিন নিয়ম?

ভারতীয় রেলের তৎকাল টিকিট বুকিং সিস্টেমে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে চলেছে। আগামী ১৫ জুলাই, ২০২৫ থেকে IRCTC-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে তৎকাল টিকিট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে ওয়ান-টাইম পাসওয়ার্ড (OTP) ভিত্তিক আধার যাচাইকরণ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। রেলের এই নতুন পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হলো তৎকাল টিকিটের জালিয়াতি বন্ধ করে সাধারণ যাত্রীদের জন্য টিকিট প্রাপ্তি সহজ করা।
দীর্ঘদিন ধরেই তৎকাল টিকিট নিয়ে ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ উঠছিল। যাত্রীরা অভিযোগ করতেন যে, টিকিট বুকিং শুরু হতেই সার্ভার ডাউন হয়ে যায় এবং মুহূর্তের মধ্যেই সব টিকিট শেষ হয়ে যায়। এই সুযোগে অসাধু চক্রগুলো সাধারণ মানুষের থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে টিকিট বিক্রি করতো। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে ভারতীয় রেল এই কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই IRCTC-এর ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপে তৎকাল টিকিট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে আধার ভিত্তিক ই-অথেন্টিকেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এবার, ১৫ জুলাই থেকে OTP ভিত্তিক আধার যাচাইকরণ চালু হলে এই প্রক্রিয়া আরও সুসংহত হবে। এর ফলে, আধার তথ্য যাচাই ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা এজেন্ট তৎকাল টিকিট বুক করতে পারবেন না।
নতুন নিয়মের বিশদ বিবরণ:
- আধার বাধ্যতামূলক: আগামী ১৫ জুলাই, ২০২৫ থেকে তৎকাল টিকিট বুকিংয়ের জন্য আধার নম্বর যাচাইকরণ বাধ্যতামূলক হচ্ছে। OTP-এর মাধ্যমে এই যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
- জালিয়াতি প্রতিরোধ: রেল মনে করছে, এই নতুন সিস্টেম চালু হলে তৎকাল টিকিট নিয়ে চলমান জালিয়াতি অনেকটাই কমে যাবে।
- এজেন্টদের জন্য কড়াকড়ি: বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, তৎকাল বুকিং যাত্রার আগের দিন সকাল ১০টায় (এসি কামরা) এবং সকাল ১১টায় (স্লিপার ক্লাস) শুরু হয়। নতুন নিয়মে, টিকিট বুকিং শুরু হওয়ার প্রথম ৩০ মিনিট এজেন্টরা কোনো টিকিট বুক করতে পারবেন না। অর্থাৎ, এজেন্টরা সকাল ১০:৩০-এর আগে এসি এবং সকাল ১১:৩০-এর আগে স্লিপার ক্লাসের টিকিট কাটতে পারবেন না। এই ৩০ মিনিট সময় সাধারণ যাত্রীরা টিকিট কাটার অগ্রাধিকার পাবেন।
- PRS কাউন্টারেও OTP: রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, শুধুমাত্র অনলাইন প্ল্যাটফর্মই নয়, PRS কাউন্টার বা অনুমোদিত এজেন্টদের মাধ্যমেও যদি কেউ তৎকাল টিকিট বুক করতে চান, সেক্ষেত্রে তাদেরও OTP ভেরিফিকেশন বাধ্যতামূলক করা হবে।
রেলমন্ত্রীর কথায়, “সাধারণ যাত্রীরা যাতে তৎকালে টিকিট পান, তার জন্যই এই নতুন নিয়ম আনা হয়েছে। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে রেল পরিষেবা সবার জন্য সহজলভ্য হবে এবং কোনো রকম জালিয়াতি বরদাস্ত করা হবে না।”
এই নতুন নিয়ম চালু হলে সাধারণ যাত্রীরা অপেক্ষাকৃত সহজে তৎকাল টিকিট পাবেন এবং টিকিট কালোবাজারি অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই পদক্ষেপ ভারতীয় রেলের ডিজিটাল ইন্ডিয়া উদ্যোগের একটি অংশ হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে, যা পরিষেবাকে আরও স্বচ্ছ ও ব্যবহারকারী-বান্ধব করে তুলবে।