“ইরান কখনও আত্মসমর্পণ করবে না”-আমেরিকাকে কড়া ভাষায় চ্যালেঞ্জ করলেন খামেনি

ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর, যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার দু’দিন পরই জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রথম ভাষণে তীব্র হুঙ্কার ছাড়লেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। বৃহস্পতিবার তাঁর ভাষণে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের কাছে ইরান কখনও আত্মসমর্পণ করবে না। তাঁর এই দৃঢ় অবস্থান বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
“পরাজয় স্বীকার করব না, আমরা শক্তিশালী জাতি”:
নিজ বক্তব্যে খামেনি বলেন, “ট্রাম্প আমাদের সামনে সত্য স্পষ্ট করেছেন, পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র আসলে কী চায়। যুক্তরাষ্ট্র তখনই সন্তুষ্ট হবে— যখন আমরা পরাজয় স্বীকার করব এবং তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করব।”
এরপরই অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি ঘোষণা করেন, “কিন্তু এমনটা কখনও ঘটবে না; ইরান কখনও মাথা নত করবে না। আমরা শক্তিশালী জাতি।” খামেনির এই মন্তব্য ইরানের জাতীয় আত্মমর্যাদা এবং বিদেশি শক্তির কাছে মাথা নত না করার দৃঢ় সংকল্পকে তুলে ধরে।
যুদ্ধবিরতি ও বিজয়ের দাবি:
গত ২৩ জুন, টানা ১২ দিনের সংঘাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে ইরান এবং ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে যায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার কয়েক ঘণ্টা পর ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এক বিবৃতিতে জানান, তেহরান ট্রাম্পের প্রস্তাব মেনে নিয়েছে এবং ইসরায়েল যদি আঘাত না করে— তাহলে ইরানও আর আঘাত করবে না।
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার দু’দিন পর আজ, বৃহস্পতিবার, খামেনি এই প্রথম জনসমক্ষে এলেন এবং ভাষন দিলেন। সেই ভাষণে তিনি ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতে ইরানের বিজয় হয়েছে বলে দাবি করেন। তাঁর এই দাবি আঞ্চলিক রাজনীতিতে ইরানের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করার ইঙ্গিত দেয়।
খামেনির এই চ্যালেঞ্জিং বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের চলমান ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতাকে আরও এক ধাপ বাড়িয়ে দিল। আন্তর্জাতিক মহল এখন ইরানের এই দৃঢ় অবস্থানের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী হবে, তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।