‘দেবী চৌধুরানী’র প্রচারে প্রসেনজিৎ-শ্রাবন্তী নৈহাটিতে, বঙ্কিমচন্দ্রের জন্মভিটে থেকে শুরু হল ঐতিহাসিক যাত্রা

সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ১৮৮তম জন্মদিনে তার জন্মভূমি নৈহাটির কাঁঠালপাড়া থেকে শুরু হলো শুভ্রজিৎ মিত্র পরিচালিত বহু প্রতীক্ষিত ছবি ‘দেবী চৌধুরানী’র প্রচার। বঙ্কিমচন্দ্রের কিংবদন্তী উপন্যাসের এই বড়পর্দার রূপায়ণে ভবানী পাঠকের চরিত্রে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং দেবী চৌধুরানীর ভূমিকায় শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় আজ নৈহাটির বড়মার মন্দিরে পুজো দিয়ে তাদের প্রচার কার্যক্রমের সূচনা করেন। তাদের সাথে ছিলেন ছবির অন্যান্য কলাকুশলী যেমন দর্শনা বণিক ও বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়।

বঙ্কিমচন্দ্রের জন্মভিটে ও বড়মার আশীর্বাদ
আজ সকালে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় সহ ছবির পুরো দল সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মভিটেতে হাজির হন। সেখানে তারা বঙ্কিমচন্দ্রের আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানান। এরপর তারা নৈহাটির ঐতিহ্যবাহী বড়মার মন্দিরে যান এবং পুজো দিয়ে ছবির প্রচারের শুভ সূচনা করেন।

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন, “এর আগে বড়মার মন্দিরে আসার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। আজ এসে খুব ভালো লাগছে। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে এসে ঘুরে গেলাম। আজ বড়মার কাছে পুজো দিয়ে আমাদের দেবী চৌধুরানীর প্রচার শুরু হল। এর থেকে ভালো পাওয়া কিছু হয় না। বড়মার কাছে সবাই সমান।”

‘সংস্কৃতি ও ইতিহাস’ – প্যান ইন্ডিয়া ছবির মন্ত্র
ছবির প্রচার কৌশল নিয়ে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিন আজ। তাকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, সারা দেশ গর্ববোধ করে। তার জন্মস্থানে এসে খুব ভালো লাগছে। এটা আমাদের কাছে গর্বের বিষয়। তাই বঙ্কিমবাবুর জন্মদিনটাকেই আমরা বেছে নিলাম প্রচারের শুরুর জন্য। কারণ এই দিনটা আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ইতিহাস তৈরি করে গিয়েছেন।”

প্যান ইন্ডিয়া ছবির প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, “আমাদের অস্ত্র হল আমাদের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও উপন্যাস। সেগুলি নিয়ে ভালো বাংলা ছবি করা যায়। এই ছবি বাংলা ভাষায় হলেও যে কোনো ভাষার মানুষ বুঝতে পারবেন। কারণ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা অসাধারণ। এখন বাংলার মানুষ বই দেখে, বাংলার মানুষ বই পড়তে ভালোবাসে। সকলের বাড়িতে লাইব্রেরি আছে। আজকের দুনিয়ার মানুষের ভালোলাগার জন্য আমরা কমার্শিয়াল ক্ল্যাসিক ছবি তৈরি করার চেষ্টা করেছি।”

শ্রাবন্তী ও অন্যান্য কলাকুশলীর অভিজ্ঞতা
দেবী চৌধুরানী চরিত্রে অভিনয় করা শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দেবী চৌধুরানীর স্রষ্টা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে এসে ছবির প্রচার শুরু করতে খুব ভালো লাগছে। আমাকে দেবী চৌধুরানী হিসাবে কাস্ট করার জন্য ধন্যবাদ জানাই। বুম্বাদার সাপোর্ট ছাড়া ছবিটা আমরা এগতো পারতাম না। বাকি কলাকুশলীরা খুব ভালো ছবিতে কাজ করেছে। পুজোতে ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে।”

চলতি বছরের পুজোতে মুক্তি পেতে চলা এই ছবিতে শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় (দেবী চৌধুরানী) ও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (ভবানী পাঠক) ছাড়াও অভিনয় করেছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী, অর্জুন চক্রবর্তী, বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়, দর্শনা বণিক, ভরত কল, কিঞ্জল নন্দের মতো তারকারা। এই ছবির মাধ্যমেই সঙ্গীতশিল্পী মনোময় ভট্টাচার্য প্রথমবারের মতো ফিল্মে অভিনয় করতে চলেছেন। ভারত, ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ত্রয়ী প্রযোজনায় নির্মিত এই ছবিটি দর্শকদের মধ্যে কতটা সাড়া ফেলে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।