OMG! কানে দুল পরে স্কুলে প্রবেশ ছাত্রের, বকাবকি করায় শিক্ষাকর্মীকে মারধর ছাত্রর

শিক্ষাঙ্গনে শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনা নতুন নয়, তবে এক শিক্ষাকর্মীকে রাস্তায় ফেলে ছাত্রদের দলবদ্ধ মারধরের ঘটনায় স্তম্ভিত লিলুয়ার টিআরজিআর খেমকা হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। একটি সামান্য কানের দুল পরা নিয়ে বকাবকির জেরে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্র তার দলবল নিয়ে শিক্ষাকর্মীর ওপর চড়াও হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত ওই শিক্ষাকর্মী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ লিলুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে এবং অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
জানা গেছে, গত শুক্রবার, ২০শে জুন, টিআরজিআর খেমকা হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির আর্টস বিভাগের এক ছাত্র কানে একটি ফ্যাশনেবল দুল পরে স্কুলে আসে। টিফিনের সময় স্কুলের শিক্ষাকর্মী জয়দীপ প্রামাণিক তাকে এই বিষয়ে বকাবকি করেন এবং কান থেকে দুল খুলে ফেলার নির্দেশ দেন। শিক্ষকের এই কথায় ছাত্রটি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
অভিযোগ, পরদিন, শনিবার, ২১শে জুন, শিক্ষাকর্মী জয়দীপ প্রামাণিক স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় ঝিল রোডে ওই ছাত্রটি তার দলবল নিয়ে তাঁর উপর অতর্কিত হামলা চালায়। বাঁশ এবং লাঠি দিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় জয়দীপ প্রামাণিক গুরুতর জখম হন। খবর পেয়ে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান।
এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রেক্ষিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে লিলুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। প্রধান শিক্ষক স্বদেশ কুমার গিরি জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ছাত্রটি দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলের শৃঙ্খলা মানত না। নিয়মিত স্কুলের পোশাক না পরা, কানে ফ্যাশনেবল দুল পরা— এমন নানা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে ছিল। বারবার বারণ করা সত্ত্বেও সে কর্ণপাত করত না। আর এই বারণ করার জেরেই শিক্ষাকর্মীর উপর এমন হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘটনায় তাঁরা আতঙ্কিত বলে প্রধান শিক্ষক উল্লেখ করেন।
স্কুলের অন্য একজন শিক্ষক জানান, ঘটনার পর অভিযুক্ত ছাত্রের অভিভাবকদের ডেকে সতর্ক করা হয়েছে এবং পুলিশও ছাত্রটিকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সতর্ক করেছে। সোমবার, ২৩শে জুন, ছাত্রটি স্কুলে এলে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনা নিয়ে স্কুলের শিক্ষক মণ্ডলী একটি জরুরি বৈঠকে বসেছেন এবং অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
যদিও এই ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্র বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এই ঘটনা শিক্ষাঙ্গনে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার প্রশ্ন আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।