
১৯৭৫ সালের ২৫শে জুন, ভারতীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় – জরুরি অবস্থা জারির দিন। এই দিনটিকে স্মরণ করে বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানিয়েছেন, জরুরি অবস্থা বিরোধী আন্দোলন তাঁর জীবনে এক “শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা” ছিল। এই অভিজ্ঞতাই তাঁকে গণতান্ত্রিক কাঠামোর প্রাণশক্তি সংরক্ষণে অনুপ্রাণিত করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর পোস্টে লিখেছেন, “যখন জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল, তখন আমি একজন তরুণ আরএসএস প্রচারক ছিলাম। সেই সময়কালে আমাদের গণতান্ত্রিক কাঠামো সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম।” তিনি আরও বলেন, এই কঠিন সময়ে তিনি রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছেন, যা তাঁর রাজনৈতিক জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে।
প্রধানমন্ত্রী ব্লুক্রাফ্ট ডিজিটাল ফাউন্ডেশন কর্তৃক সংকলিত ‘দ্য ইমার্জেন্সি ডায়েরিজ’ নামক একটি বইয়ের কথাও উল্লেখ করেন। এই বইটিতে জরুরি অবস্থার বছরগুলিতে তাঁর ব্যক্তিগত যাত্রার বর্ণনা রয়েছে। তিনি জানান, বইটির ভূমিকা লিখেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়া, যিনি নিজেও জরুরি অবস্থা বিরোধী আন্দোলনের এক প্রবীণ নেতা। মোদী আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, “এই বইটি সেই সময়ের অনেক স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে।”
বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে জরুরি অবস্থার ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি দেশবাসীর কাছে, বিশেষ করে যারা জরুরি অবস্থার সেই “কালো দিনগুলি” মনে রেখেছেন অথবা যাদের পরিবার সেই সময়ে কষ্ট ভোগ করেছিলেন, তাঁদের সকলকে সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান। তাঁর মতে, এটি ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ সালের “লজ্জাজনক সময়” সম্পর্কে তরুণদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করবে এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হিসেবে কাজ করবে।
প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তা একাধারে তাঁর ব্যক্তিগত স্মৃতিকথা এবং একই সাথে গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর অঙ্গীকারকে তুলে ধরেছে। এটি নতুন প্রজন্মের কাছে ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে তুলে ধরার একটি প্রচেষ্টা, যাতে ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি না ঘটে।