
স্নানযাত্রার পর জগন্নাথদেবের কথিত ‘জ্বরের’ উপশমে ব্যবহৃত বিশেষ ঔষধি-লাড্ডু বা ‘মোদক’ চুরি যাওয়ার অভিযোগ ঘিরে গত সোমবার থেকে পুরীর মন্দিরে যে তুলকালাম চলছিল, অবশেষে তাতে ইতি পড়ল। ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন মঙ্গলবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, শ্রী জগন্নাথ মন্দির থেকে কোনো ‘মোদক’ চুরি হয়নি। মন্ত্রীর এই ঘোষণায় অজানা আশঙ্কায় ভোগা ভক্তদের মনে স্বস্তি ফিরেছে।
ঠিক কী ঘটেছিল?
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ভগবান বলরামের রক্ষী পূজারী হলধর দাস মহাপাত্র অভিযোগ করেন যে, স্নানযাত্রার পর জগন্নাথদেব, বলভদ্র এবং বোন সুভদ্রার অসুস্থতার সময় নিবেদিত ৩১৩টি ‘মোদকের’ মধ্যে ৭০টি নাকি খোয়া গিয়েছে। এই ‘মোদক’গুলি রাজবৈদ্য কর্তৃক বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয় এবং বিশ্বাস করা হয় যে এগুলো খেয়েই দেবতারা আরোগ্য লাভ করেন। পবিত্র এই উপাদানের চুরির অভিযোগে শোরগোল পড়ে যায় এবং হলধর দাস মহাপাত্র শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনের (SJTA) প্রধান প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। অতীতে এমন ঘটনা ঘটেনি দাবি করে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
তদন্তে উঠে এল সত্য: মন্ত্রীর ঘোষণা
মোদক চুরির অভিযোগটি সামনে আসতেই ওড়িশা সরকার এবং মন্দির প্রশাসন দ্রুত তৎপর হয়। পিটিআই সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন সাংবাদিকদের জানান, “শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনের (SJTA) প্রধান প্রশাসক অরবিন্দ পাধীর দেওয়া তথ্য অনুসারে মন্দির থেকে কোনও মোদক চুরি হয়নি।” অর্থাৎ, মন্দির কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরীণ তদন্তে এই চুরির কোনো প্রমাণ মেলেনি।
বিতর্কের অবসান, স্বস্তিতে ভক্তরা
রথযাত্রা উৎসবের ঠিক আগে দেব-দেবীর উদ্দেশ্যে নিবেদিত একটি পবিত্র জিনিস হারানোর অভিযোগ ভক্তমহলে ব্যাপক জল্পনা ও গুজবের জন্ম দিয়েছিল। হলধর দাস মহাপাত্র অভিযোগ করেছিলেন, কড়া নিরাপত্তা সত্ত্বেও মোদক খোয়া যাওয়ায় এর পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে। তিনি ঘটনার তদন্তও দাবি করেছিলেন। তবে আইনমন্ত্রীর এই সুস্পষ্ট ঘোষণায় যাবতীয় জল্পনার অবসান হলো। আপাতত পুরীর মন্দিরে ‘মোদক চুরি’ বিতর্ক থিতু হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।