
কলকাতা ফুটবল মানেই মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল আর মহমেডান। কিন্তু এবার এই বৃত্তের বাইরে গিয়ে এক অভাবনীয় স্বপ্ন পূরণের পথে দক্ষিণ দিনাজপুরের খুদে ফুটবলাররা। বালুরঘাট সংসদ ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের বিশেষ উদ্যোগে এই জেলার সুপ্ত প্রতিভারা এবার ব্রাজিল বা ডেনমার্কের মতো আন্তর্জাতিক ময়দানে খেলার সুযোগ পেতে চলেছে।
বালুরঘাটে একদিনের ফুটবল ক্যাম্প: আন্তর্জাতিক স্তরের প্রশিক্ষণের দিশা
রবিবার বালুরঘাট শহরের টাউন ক্লাব মাঠে আয়োজিত হলো এক বিশেষ ফুটবল ক্যাম্প। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত এই একদিনের শিবিরে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ছুটে আসে প্রায় ৩৫০ জন খুদে ফুটবলার, যার মধ্যে ৮০ জন মেয়েও ছিল। তাদের উদ্দেশ্য একটাই— ফুটবলের মাঠে নিজেদের প্রতিভা প্রমাণ করা এবং আন্তর্জাতিক স্তরের প্রশিক্ষণের সুযোগ পাওয়া।
আন্তর্জাতিক কোচের চোখে নতুন প্রতিভা
এই ক্যাম্পে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফুটবল কোচ মলয় সেনগুপ্ত। মুম্বইয়ে তাঁর একটি নিজস্ব ফুটবল অ্যাকাডেমি রয়েছে, যেখানে উচ্চমানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সুকান্ত মজুমদার মলয় সেনগুপ্তকে অনুরোধ করেন, এই শিবির থেকে প্রতিভাবান ফুটবলারদের বেছে নিতে, যাতে তারা তাঁর অ্যাকাডেমিতে উন্নত প্রশিক্ষণ নিতে পারে। মলয় সেনগুপ্ত বেশ কয়েকজন প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে প্রাথমিকভাবে বাছাই করেছেন বলে জানা গেছে।
সুকান্ত মজুমদারের স্বপ্ন: জেলা থেকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে
শিবিরে উপস্থিত থেকে অংশগ্রহণকারীদের উৎসাহিত করেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি জানান, এই শিবিরের মূল লক্ষ্য হলো জেলার প্রতিটি কোণায় লুকিয়ে থাকা ফুটবল প্রতিভাদের খুঁজে বের করা। শুধু খেলার সুযোগ দেওয়াই নয়, ভবিষ্যতে তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগ দক্ষিণ দিনাজপুরের ক্রীড়াক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
মলয় সেনগুপ্তের প্রতিশ্রুতি: ব্রাজিল-ডেনমার্কের স্বপ্ন সত্যি হবে
মলয় সেনগুপ্ত এই উদ্যোগের প্রশংসা করে জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে যেসব খেলোয়াড়ের প্রতিভা চোখে পড়েছে, তাদের একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এই খেলোয়াড়দের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য রাজ্যের বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর তাঁর অ্যাকাডেমির মাধ্যমে তাদের ব্রাজিল, ডেনমার্ক, শ্রীলঙ্কার মতো দেশে খেলার সুযোগ করে দেওয়া হবে। এই ধরনের ক্যাম্পের ফলে শুধুমাত্র দক্ষিণ দিনাজপুর নয়, বাংলার ফুটবল মানচিত্রে এক নতুন অধ্যায় রচিত হবে বলে তিনি মনে করেন।
এই উদ্যোগটি একদিকে যেমন জেলা স্তরের প্রতিভাদের জন্য একটি বড় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করল, তেমনই অন্যদিকে বাংলার ফুটবলকে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।