
ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযানের পর চরম সতর্কতায় রয়েছে একাধিক মার্কিন শহর। বিশেষ করে নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত ফোর্স, জারি রয়েছে ‘হাই অ্যালার্ট’।
নিউ ইয়র্ক পুলিশ (NYPD) জানিয়েছে, তারা শহরজুড়ে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ প্রকাশিত এক পোস্টে NYPD জানায়,“ইরানে উদ্ভূত পরিস্থিতির ওপর আমরা নজর রাখছি। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে NYC-র ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক স্থানে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং আমরা আমাদের ফেডারেল সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করছি।”
ওয়াশিংটন ডিসির মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগও (MPD) জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং স্থানীয়, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। এক বিবৃতিতে MPD জানায়,
“এই মুহূর্তে কোনও সুনির্দিষ্ট হুমকি না থাকলেও, আমরা শহরের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিরাপত্তা জোরদার করেছি। পাশাপাশি, নাগরিকদের সতর্ক থাকার আবেদন জানানো হয়েছে।”
ইরানে কী ঘটেছে?
সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ আরও চড়েছে। ঘটনার পর হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন—“ইরানের প্রধান পারমাণবিক ঘাঁটিগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।”
অন্যদিকে, ইরানের বিদেশমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাঘচি জানিয়েছেন,“মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ এবং পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি (NPT) লঙ্ঘন করেছে। ইরান আত্মরক্ষার অধিকার রাখে।”
ইরানের পাশে দাঁড়িয়ে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী জানিয়েছে,“এই হামলা যুদ্ধের ঘোষণা সমতুল।”
ইরান-আমেরিকা সংঘাতের জেরে শুধু ওই দুই দেশের নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা চিত্রটাই বদলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা আন্তর্জাতিক মহলের। ইজরায়েলের সঙ্গে ইরানের বিবাদের প্রেক্ষিতে এমনিতেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি, তার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের ‘বাঙ্কার বাস্টার বম্ব’-এর ব্যবহারে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নিচ্ছে।
পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, এখন সেই দিকেই নজর গোটা বিশ্বের।এই মুহূর্তে, আমেরিকার বড় শহরগুলোয় সজাগ নিরাপত্তা বাহিনী ও উদ্বেগে জনসাধারণ।