জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে এই বছরের এপ্রিলে ঘটে যাওয়া নৃশংস জঙ্গি হামলায় বড় সাফল্য পেল জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA)। ২৬ জন নিরীহ পর্যটককে হত্যার ঘটনায় জড়িত তিন পাকিস্তানি লস্কর-ই-তৈবা (LeT) জঙ্গিকে আশ্রয় ও রসদ সরবরাহের অভিযোগে রবিবার দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই গ্রেপ্তারের ফলে পহেলগাঁও হামলার পেছনের ষড়যন্ত্রের গভীরে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে NIA।
NIA জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন বাটকোটের পারভেজ আহমেদ জোথার এবং পহেলগাঁওয়ের হিল পার্কের বশির আহমেদ জোথার। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৬৭ সালের বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের ১৯ ধারার অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে এবং তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
তদন্তকারী সংস্থার মতে, এই দুই অভিযুক্ত হামলা চালানোর আগে লস্কর-ই-তৈবার জঙ্গিদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করছিল। তারা জেনেশুনে জঙ্গিদের খাদ্য, আশ্রয় এবং অন্যান্য লজিস্টিক সহায়তা প্রদান করেছে। ২২শে এপ্রিলের হামলার আগে এই আস্তানাটিকেই জঙ্গিরা তাদের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির জন্য ব্যবহার করেছিল।
হামলার ভয়াবহতা ও নতুন তথ্য
গত ২২শে এপ্রিল পহেলগাঁওতে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরস্ত্র পর্যটক নির্মমভাবে নিহত হয়েছিলেন এবং আরও ১৬ জন গুরুতর আহত হন। এই ঘটনা উপত্যকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছিল।
NIA-এর বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, গ্রেপ্তারকৃত পারভেজ আহমেদ জোথার এবং বশির আহমেদ জোথার হামলার সাথে জড়িত তিনজন সশস্ত্র জঙ্গির পরিচয় নিশ্চিত করেছে। তারা জানিয়েছেন যে, হামলাকারীরা নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার সাথে যুক্ত পাকিস্তানি নাগরিক।
NIA-এর তদন্তে উঠে এসেছে যে, ধৃত পারভেজ আহমেদ এবং বশির আহমেদ হামলার আগে হিল পার্কের একটি ঝুপড়িতে এই তিন সশস্ত্র জঙ্গিকে আশ্রয় দিয়েছিল। তারা শুধুমাত্র আশ্রয়ই দেয়নি, বরং ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে পহেলগাঁওতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের বেছে বেছে হত্যার জন্য জঙ্গিদের সবরকম সহযোগিতা করেছে।
তদন্তের গতিপ্রকৃতি
এই গ্রেপ্তারগুলো পহেলগাঁও হামলার তদন্তে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় এনে দিয়েছে। NIA এখন এই গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে হামলার পেছনের সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক এবং তাদের সহযোগী আরও কারা ছিল, তা জানার চেষ্টা করছে। এই সাফল্য ভবিষ্যতে উপত্যকায় সন্ত্রাস দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
